এক ট্রিপে ১৬ দিনে ১৬ হাজার টাকায় কল্পনার বাংলাদেশেকে দেখেছি।

 

এক ট্রিপে ১৬ দিনে ১৬ হাজার টাকায় কল্পনার বাংলাদেশেকে দেখেছি। রাংগামাটি, বান্দরবান,খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের Best Tourism প্লেসগুলা দেখতে চাইলে ও কম খরচে ভ্রমন করতে চাইলে ধৈর্য নিয়ে লেখাটা পড়ুন। 


নিজের অনেক স্বপ্ন আছে ঘুরে বেড়াতে চান? দেখতে চান নিজের দেশটাকে? এই স্বপ্ন পূরনের পথে আমার অভিজ্ঞতা গুলা আপনার স্বপ পুরনে কাজে লাগুক সেই আসা নিয়ে আজকের লেখাটি। 


এই ট্রিপে কখনো বুনো পথে হেটেছি সুন্দর ঝর্না দেখার জন্য কখনো বা হেটেছি দেশের অফিসিয়াল সর্বোচ্চ চূরায় যাওয়ার জন্য। রাত গুলা কাটিয়েছি কখনো নৌকায়, তাবুতে, হোটেলে,পাহাড়িদের মাচার ঘরে। এমনো অনেক কাহিনী রচনা হয়েছে আমাদের - তাজিং ডং সামিট করে ফিটনেসের কারনে কেউ বাড়ি ফিরেছে কেউবা আবার তাজিং সামিট করে আমিয়াখুমের পথে হেটে থুইসাপাড়া গিয়েও আমিয়াখুম না দেখে ফিরতে হয়েছে। জোকের কামড়ে নাস্তানাবুদ হয়েছি কতবার। সেন্টমার্টিন ট্রলারে করে যাত্রায় মাঝপথ থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল, পরদিন গিয়েছি। 


আমাদের রুট ছিল

ঢাকা-কাপ্তাই-বিলাইছড়ি(ন কাটা,মুপ্পছড়া,ধুপপানি ঝর্না)-কাপ্তাই-রাংগামাটি -মারিশ্যা-সাজেক- খাগড়াছড়ি -চট্রগ্রাম- বান্দরবান-থানচি-তাজিংডং-অসমাপ্ত আমিয়াখুম-থানচি-আলিকদম-কক্সবাজার-টেকনাফ-সেন্টমার্টিন-ঢাকা 


Day-00

গত বছর সেপ্টেম্বরে ৯ দিনের উত্তরবঙ্গ ট্রিপ শেষ করে বাসায় ফিরে কিছুদিন যেতে না যেতেই প্ল্যানিং করি #পাহাড় #ঝর্না ও #সাগরের কম্বিনেশন এবং #ব্যাকপ্যাকিং, #ক্যাম্পিং,#ট্রেকিং ও #রিলেক্স ট্রিপের কম্বিনেশনে লাইভ টাইম মেমরেবল ট্রিপের প্ল্যান নিয়ে ০৩ জন বেড়িয়ে পড়ি। 


আমাদের গ্রুপের মেম্বার ০৩ জন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২১ জন পর্যন্ত হয়েছিল,বিভিন্ন প্লেসে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ট্রিপে এড হয়ে ঘুরে বাড়ি ফিরেছে। 


সেপ্টেম্বরের শেষে মোটামোটি বৃষ্টি চলছিল সারাদেশে, আমরা ০৩ জন রাত ১০.৩০ এর উত্তরা থেকে শ্যামলী পরিবহনে করে ৫৫০ টাকায় (Non Ac) জন প্রতি টিকেটে কাপ্তাই এর উদ্দেশ্যে রউনা হই। 


#যাতায়াত খরচ- ৫৫০ 

#খাওয়ার খরচ- ৫০ হালকা নাস্তা

#থাকার খরচ-০০ জার্নি 


Day-01

সকাল প্রায় ৫.৩০ এর দিকে কাপ্তাই ঝেটিঘাট নামিয়ে দেয় বাস। বাস থেকে নেমে পাবলিক টয়লেটে ফ্রেস হয়ে নাস্তা সেরে নেই। কাপ্তাই ঘাটে সেদিন ছিল হাট/বাজারের দিন সকাল সকাল অনেক জায়গা থেকে নৌকায় করে মালামাল নিয়ে আসছেন লেকের বাসিন্দারা। কাপ্তাই ঘাট থেকে বিলাইছড়ি যাওয়ার লোকাল নৌকা ছাড়ে ৮.৩০ এ আমাদের কাছে সময় আছে যেহেতু তাই বাজারে ঘুরেফিরে সময় কাটাই। বিলাইছড়ির দিকে ঘুরতে গেলে NID এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে কেউ যদি না নিয়ে যান তাহলে কাপ্তাই ঘাট থেকে ৪-৫ টা NID এর ফটোকপি করে নিবেন। 


৮.৩০ এ নৌকা ছেড়ে গিয়ে প্রায় ১১ টার দিকে বিলাইছড়ি ঘাটে পৌছায়( নৌকা ভাড়া- ৫৫ টাকা) , পথি মদ্ধে গাছকাটা ছড়া ক্যাম্পে NID Copy জমা নেয় আর তারা তাদের মোবাইলে ছবি তুলে রাখে। বিলাইছড়ি ঘাটে নামতে নামতেই হাসেম মাঝির সাথে দেখা হয়, এই সময় (শুক্র-শনি বাদে)তেমন টুরিষ্ট নাই তাই মাঝি ভাই আমাদের সাথে কই কই যাবো কি করবো?এইসব বিষয় নিয়ে কথা বলছিল ক্যান জানি অন্য কারো সাথে নৌকা নিয়ে আমার ও কথা বলার ইচ্ছা হয় নাই। নৌকায় করেই ১ দিন ন কাটা,মুপ্পছড়া ও অন্যদিন ধুপপানি ঝর্না দেখতে যেতে হবে তাই ঘাটে নেমেই নৌকা টা ফায়নাল করছিলাম। হাসেম ভাই এর সাথে কথা বল্লাম ২ দিনে কেমন কি দিতে হবে? নৌকায় থাকা যাবে নাকি? আলহামদুলিল্লাহ ২ দিনের নৌকা ভাড়া ও নৌকায় থাকার খরচ দিয়েছিলাম ২৫০০ টাকা। মাঝি ভাই বরই উদার মানুষ বাসা থেকে মুক্তার পাটি ও শিমুল তুলার বালিশ দিয়েছিল আমাদের ঘুমের শান্তির জন্য। নৌকা ফায়নাল করে ব্যাগপত্র রেখে লাঞ্চ করে নেই ঘাটের পাসেই ১ টা রেস্টুরেন্ট আছে, সামনে এগিয়ে গেলে রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক হোটেল ও পাবেন। লাঞ্চ শেষ করে নৌকায় করে ১.৫ ঘন্টার জার্নি ছিল ন কাটা ও মুপ্পছড়ার ট্রেইলে যেতে, ট্রেইলে পৌছে ৫০০ টাকায় গাইড নেই। গাইডের দেখানো পথেই ১.৫ ঘন্টা ট্রেকিং এর মুপ্পছড়ায় পৌছাই, আগের দিন বৃষ্টি হওয়াতে ঝর্নার আসল রুপ দেখতে পেয়েছিলাম। মুপ্পছড়া দেখে আসার পথে ন কাটা ঝর্নায় যাই, ন কাটা ঝর্নায় গা ভিজিয়ে নেই। এর মদ্ধেই বৃষ্টি শুরু হয় কোন রকম পলিথিন ও কলাপাতায় মোবাইল ও ক্যামেরা গুলা মুড়িয়ে রাখি। বৃষ্টিতে পুরা ট্রেক ভিজে যায় পিচ্ছিল ট্রেকে নৌকায় ফিরে আসতে ভাল সময় লাগে। বিকালের মদ্ধেই বিলাইছড়ি বাজারে চলে আসি। 


সন্ধার পর তেমন কিছুই করার ছিল না, নৌকায় বসে বসে চাঁদনী রাতে গান বাজনায় করে কিছুটা চিল মুডে বিলাইছড়ি ঘাট পাড়ে রাত্রীযাপন করি । 


জনপ্রতি হিসাব 


#যাতায়াত খরচ- ৫৫ + ৮৩৩ (২৫০০÷৩)  

#খাওয়ার খরচ- ৬০+১২০+১৩০

#থাকার খরচ- ০০

গাইড ফি-( ৫০০÷৩) ১৬৬ টাকা 


Day-02

খুব ভোড়ে ঘুম থেকে উঠে ঘাটের পাশে দিদির রেস্টুরেন্টে আলুভর্তা +ডাল+ডিম অর্ডার করি, দিদি পার্সেল তৈরী করতে করতে ফ্রেস হয়ে নেই। খাবার নিয়েই জলদি জলদি নৌকা ছেড়ে দেই কারন খুব সকালে না বেড় হলে বিলাইছড়ি পৌছে কাপ্তাই যাওয়ার লোকাল বোট পাবো না তাই,শেষ বোট বিলাইছড়ি টু কাপ্তাই বিকাল ৪.৩০ মিনিট। 


প্রায় ৭ টার দিকে রউনা হয়ে মিনিট ৪০ যাওয়ার পর আর্মি ক্যাম্পে NID এর কপি সহ ছবি তুলে রাখে আর্মিরা। নৌকায় করে আঁকাবাঁকা পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কর্ণফুলী নদীতে চলতে বেশ দারুন এক অনুভূতি। টারজান টাইপ জীবন আমাদের খাওয়া থাকা চলা সবই নৌকায় 🥰,প্রায় ৩ ঘন্টা পর ধুপপানি ঝর্নার ট্রেইলে পৌছাই। বোট থেকে নেমে ৫০০ টাকায় একজন গাইড নেই। এইদিকে গাইড ৫০০ টাকার কমে কাউরে পাওয়া যায় না রেট করা, গাইডের সাথে ট্রেকিং শুরু করেই জানতে পারলাম ঝর্নায় বেশ পানি। তার কথা শুনে আমার মন শুধু ঝর্নার পানেই হাটছিল। ২ ঘন্টা হাটার পর ঝর্নায় যাওয়ার কিছু আগে একটা পাড়ায় ব্রেক নেই। শুকনা খাবার ও কলা খেয়ে নেই। পাড়ায় গিয়ে আমার আবার জুম চাষের লাল চাল দিয়ে ভাত খাওয়ার ইচ্ছা হয়, ইচ্ছা হইছে এটাতো অপূরণ রাখা যাবে না। এক দিদিকে কোনমতে রাজি করে রান্না করতে বলে ঝর্নার দিকে এগিয়ে যাই। ঝর্নায় গিয়েই আমার মাথা নষ্ট এমন সুন্দর ঝর্না বাংলাদেশে আগে দেখি নাই, আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না মনে হচ্ছিল #মেঘালয়ের কোন বুনো ঝর্না। 


ঝর্নাটা দেখে মন আমার এমন খুশি হয় আল্লাহ মালিকের প্রতি ভালবাসা আরও বেড়ে যায় আর তখন ২ রাকাত নফল নামাজ পড়ে নেই ঝর্নার নিচে গুহার মত জায়গায়। ঝর্না থেকে ফিরে এসে খাওয়া দাওয়া করে নৌকায় চলে আসি, সেদিন ও হালকা বৃষ্টি হয় পিচ্ছিল রাস্তায় ট্রেকিং করেই ফিরতে হয়েছিল। 


নৌকায় করে বিলাইছড়ি ঘাট ফিরতে ফিরতে বিকাল প্রায় ৫.১৫ জানা কথা লোকাল বোট পাবো না, কিছুটা চিন্তায় পড়ে যাই কাপ্তাই যেতে হবে যেকোন উপায়ে। ঢাকা ও কক্সবাজার থেকে ২+২ জন আমাদের সাথে জয়েন করার জন্য অলরেডি কাপ্তাই চলে আসছে তাই আরো চিন্তা। কাপ্তাই থেকে শেষ বোট ছেড়ে এসে বিলাইছড়ি পৌছে সন্ধায় প্রায় ৬. ৪০ মিনিট তারা সকালে ফিড়বে আমরা রিকুয়েস্ট করাতে আমাদের নিয়েই কাপ্তাই রউনা হন। রিজার্ভ বোট নিয়েই রউনা হয় কাপ্তাই ভাড়া দেই ৯০০ টাকা এম্নিতে রিজার্ভ ১২০০ টাকা। 


রাত প্রায় ৯.২০ এর দিকে কাপ্তাই ঘাট পৌছাই। আগে থেকেই প্ল্যানিং ছিল কাপ্তাই তে ক্যাম্পিং করার, কাপ্তাই প্রশান্তি পার্ক বন্ধ থাকায় নতুন প্লেস হিসাবে #কাপ্তাই_রিভারভিউ_রেস্টুরেন্টে আমরা ৩+৪ জন ক্যাম্পিং করি। তাদের নতুন ক্যাম্প সাইট উদ্বোধন করাতে আমাদের ফ্রিতে ক্যাম্প সাইটে ক্যাম্পিং করতে দেয়। রাতে নিজেদের তাবুতেই চিল ঘুম দেই। 


#যাতায়াত খরচ- (৯০০÷৩)৩০০

#খাবার খরচ- ৬০+১০০+১২০

#থাকার খরচ- ০০ 


Day-03

ঘুম থেকে উঠে তাবুর চেইন খুলতেই মেঘের আগমনী বার্তা পাই। মেঘে ঢেকে ছিল পুরা ক্যাম্প সাইট, সূর্যের আলো বাড়ার সাথে সাথে কমতে থাকে মেঘগুলা। সকালের নাস্তা শেরে CNG তে (ভাড়া-৭০০ টাকা)করে বেড়িয়ে পড়ি রাংগামাটির উদ্দেশ্যে। কাপ্তাই থেকে রাংগামাটি যাওয়ার জন্য বেষ্ট ওয়ে হল লিংক রোড, ২৫ কি.মি পথ রাংগামাটি যাওয়ার সারা পথটাই আপনাকে রোমাঞ্চিত করবে।পাহাড়ি রাস্তায় চলতে চলতে দুই পাশে লেকের পানি দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকবেন। বেরাইন্না ও আসামবস্তির ব্রিজে ব্রেক নিয়ে ছবি তুলে রাংগামাটির দিকে আগাতে থাকি। রাংগামাটি পৌছে পূর্ব পরিচিত সাগর ভাইকে কল দেই তার নৌকায়(১৫০০ টাকা ছোট নৌকা) করেই রিজার্ভ বাজার ঘাট থেকে আমাদের #রাংগামাটি সিটি সাইট সিয়িং শুরু করি। প্রথমেই চাকমা রাজার বাড়ি, রাজবন বিহার,পলওয়েল পার্ক,ঝুলন্ত ব্রিজ ও ছোট শুভলং ঝর্নায় যাই। লেকের মাঝেই ঝুমঘর রেস্তোরায় দুপুরের খাবার খেয়ে নেই। দিন গড়িয়ে বিকাল হলে তবলছড়ি ঘাটে নামি, আমাদের আজকের প্ল্যান -আদার পাড় নামক জায়গায় ক্যাম্পিং করা। তবলছড়ি থেকে রাতের শুকনা খাবার কেনাকাটা করে সন্ধার পর পর চলে ছোট নৌকায় (১০০০ টাকা) করে চলে যাই আদার পাড়,রাতে নৌকা ও মাঝি আমাদের সাথে থাকবে। আদার পাড়ে থাকার জন্য যিনি (এক ফেসবুক পরিচিত ভাই) আমাদের সিকিউরিটি হিসাবে ছিলেন তার দাদাদ জায়গা হওয়াতে #ক্যাম্পিং এর জন্য বেশি টাকা দিতে হয়নি আমাদের ১০০০ টাকা দিয়েছিলাম ৭ জনে। ক্যাম্প সাইট এমন এক জায়গায় ছবি দেখলে অবশ্যই থাকতে ইচ্ছে করবে তবে এখানে ওয়াশরুম সহ ক্যাম্পিং এর তেমন সুবিধা নাই তাই তাদের প্রমোট করছি না। ক্যাম্পসাইদের চারিপাসেই লেক মাজখানে একটা দ্বীপের মত জায়গায় চাঁদনী রাতে নির্ঘুম ছিলাম প্রায় ৩ টা পর্যন্ত। 


#যাতায়াত খরচ- ৭০০+১৫০০+১০০০≠ ৩২০০÷৭ =৪৫৭ টাকা জনপ্রতি 

#খাওয়ার খরচ- ৬০+১৮০+৮০

#থাকার খরচ- ১০০০÷৭=১৪২ টাকা

টিকিট খরচ- ঝুলন্ত ব্রিজ ২০ টাকা পলওয়েল পার্ক ২০ টাকা


Day-4 


বেশিক্ষণ ঘুমাইনি সকাল ৬ টা বাজে আদার পাড় থেকে নৌকা ছেড়ে দেই রিজার্ভ বাজার যাবো বলে। রিজার্ভ বাজার থেকে সকাল ৭ টাকা বাজে প্রতিদিন মারিশ্যার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। আজকের যাত্রা নদী পথ হয়ে সাজেক যাবো। ঘাটে পৌছে ইকোনমি সিটের(নিচ তলায়) টিকেট নেই ভাড়া -১৯০ টাকা জনপ্রতি, ৭ টা বাজেই লঞ্চ ছেড়ে যায় মারিশ্যার উদ্দেশ্যে প্রায় ৬ ঘন্টার জার্নি সেই ভেবে মোটেও বোরিং হয়নি। লঞ্চের এপার থেকে ওপার হাটাহাটি, নতুন মানুষের সাথে কথাবলা আবার সিনেমেটিক ভিডিও করে সময় পার করেছি। সকালের কোন রকম নাস্তা করলেই লাঞ্চের কোন খবর ছিল না, লঞ্চের স্টাফদের রান্না করা দেখে তাদের কাছে আর্জি জানাই আমরা ও খাবো?এক্সট্রা চাল ও ডাল সবজি রান্না করতে পারবেন? তারা না করেন নি যদিও নিজেদের রান্না ছাড়া রেস্টুরেন্ট সার্ভিস নাই তাদের। সেদিন কি যে এক তৃপ্তি পাইছিলাম লঞ্চে খাওয়া দাওয়া কইরা।লাঞ্চ শেষ করতেই কিছুক্ষন পর মারিশ্যা পৌছাই। 


#মারিশ্যাতে সেই সকাল থেকে এক ছোট ভাই(ইয়ামিন) হাজির,ইয়ামিন রাতের নিশীতে #কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থেকে রউনা দিয়ে মারিশ্যা আসে সাজেক যাবে বলে। আমাদের টিম মেম্বার তখন ৩+৪+১ =৮ জন, ৮ জন মিলে এক চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করি যেটি আমাদের ৩ টার স্কর্টে সাজেক নিয়ে যাবে। মারিশ্যা-সাজেক যেতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টা ভাড়া নেয় one way ৪৫০০ টাকা। 


সন্ধার কিছু আগে সাজেক পৌছাই, সেদিন শুক্র-শনি না হওয়াতে সাজেকে মানুষের ভিড় ছিল না তেমন। যেদিকেই রুম খুজেছি পেয়েছিলাম কিন্তু তাদের রুমের ভাড়ার সাথে আমাদের বাজেট মিলে নাই। শেষমেশ বনলতায় বিদ্যুৎ দাদার কটেজে ২ রুমে ৮ জন ২ রাতের ভাড়া দেই ৩০০০ টাকা মানে প্রতি রুম ৭৫০ টাকায় পেয়েছিলাম। যদিও এই রুমের খরচ শুক্র-শনিতে ৩০০০ করে চলে। 


সাজেকে সন্ধার পর আগে এক রকম ছিল আর এইবার গিয়েই দেখি বিদ্যুৎ চলে আসছে, সারা সাজেকের চেহারেই পাল্টে যাচ্ছে। সাজেক গেলে হ্যালিপেড,কংলাক পাহাড় ও সাজেক ঝর্না ছাড়া দেখার কিছু নাই, ২ কি.মি একটা রাস্তার ২ পাসে কটেজ গড়ে উঠেছে। এই নিয়েই চলছে কোটি টাকা আর্নিং এর ট্যুরিজম সাজেক। রাতে #জুম্মবী_রেস্টুরেন্ট দেলোয়ার ভাইয়ের এইখানে খাওয়া দাওয়া করে ঘুম,আজকে অনেক জার্নি হয়েছে। 


#যাতায়াত খরচ- (১৯০+৪৫০০)÷৮=

#খাওয়ার খরচ- ৫০+৫০+১২০

#থাকার খরচ - ১ রাত ১৫০০÷৮ = ১৮৭ টাকা 


Day -05 


ফযরের আযানের পর পর আমার ঘুম ভাংগে, সকালের পরিবেশটা কোটি টাকা দিয়েও পাওয়া যাবে না যদিনা সময় মত তারে দেখি। মেঘেদের আপনবেগে ভেসে চলা আর মিজোরামের পাহাড় থেকে সূর্য মামা একটু একটু করে আমাদের পানে উকি দিচ্ছেন। সকালের পরিবেশ দেখে ছোট করে ঘুম দেই, ১০ টার দিকে ঘুম ভাঙে তারপর নাস্তা করে নেই সবাই। ৮ জনের মদ্ধে ৫ জনকে নিয়ে রউনা হই সাজেক ঝর্না দেখতে, আমাদের কটেজ থেকে বেশিদুর হাটার পথ না তবে খাড়া একটা ট্রেক ছিল তাই কষ্ট হয়েছে ঝর্নায় নামতে। 


ঝর্নায় যাওয়া -আসা ১+ ঘন্টা ট্রেক, 

ঝর্নায় গোসল করে আবার ফিরে আসি কটেজে,একটু চিল মুডেই দিনটা কেটেছিল। 


বিকালে হ্যালিপেডে সানসেট দেখে,রাতের ঝলমলে সাজেকটা ঘুরে বেড়াই, বাশের চা, কোল্ড কফিতেই কেটে যায় অনেকটা সময়। 


রাতে BBQ ডিনার করে ঘুম।

#যাতায়াত- ০০

#খাওয়া-৬০+১৩০+১৮০

#থাকা- ১ রাত (১৫০০÷৮)=১৮৭ টাকা 


Day 06

#সাজেক_খাগড়াছড়ি_চট্রগ্রাম 


সাজেকের সকাল টা আমার কাছে বেশি উপভোগ্য মনে হয় তাই আবারো খুব ভোড়ে উঠে কংলাক এর পথে যাই। কংলাক থেকে বর্ডার বিহীন মেঘের সাগর দেখে ৮ টার মদ্ধেই কটেজে ফিরে আসি। সকালের নাস্তা করে রেডি হয়ে থাকি যেন ১০ টার স্কর্টে খাগড়াছড়ির জন্য বেড়োতে পারি তবে আমদের রিজার্ভ গাড়ি না থাকাতে লোকাল চান্দের গাড়িতে যেতে হবে!

লোকাল চান্দের গাড়ি বাঘাইহাট থেকে মালামাল বোঝাই করে সাজেক আনে তারপর দোকানে দোকানে পৌছে দিয়ে ফ্রি হয় প্রায় ১১ টার দিকে। আমাদের নিয়ে রউনা করে ১১.৩০ এর দিকে বাঘাইহাট বাজার যেতে যেতে একবার গাড়ির চাকা ও নষ্ট হয়, ২০-৩০ মিনিট ব্রেক দিয়ে চাকা ঠিক করে বাঘাইহাট পৌছাতে প্রায় ২ টা বাজে। চান্দের গাড়ির লোকাল ভাড়া -১৩০ টাকা। বাঘাইহাট পৌছে আরেকটা চান্দের গাড়িতে জনপ্রতি ১১০ টাকায় রউনা হই খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে। খাগড়াছড়ি পৌছে লাঞ্চ করে নেই এরমধ্যে ২ জন ঢাকার উদ্দেশ্যে যাবে বলে টিম আলাদা হয়ে যাই। আমরা ৬ জন চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে রউনা হই বিকাল ৫ টার শান্তি পরিবহনে করে ভাড়া -২০০ টাকা জনপ্রতি। চট্রগ্রামের অক্সিজেনে পরিচিত ভাই ব্রাদার(মাসুদ+রবিন) এর বাড়িতেই আজকে রাতটা কাটবে। রাত প্রায় ৯.২০ এর দিকে অক্সিজেন নামিয়ে দেয় বাস, বাসস্টান্ড এর পাসেই তাদের বাসা হওয়াতে তেমন পেরা হয় নি। 


তাদের বাসায় সুন্দর থাকার জায়গা ফেলে আমরা ছাদে তাবুবাস করি এর কারন অবশ্য এক্টাই সেদিন বৌদ্মপূর্নিমা ছিল অক্সিজেনের আকাশ জুরে শুধু জলজলে ফানুসের দেখা পাই।

চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের ট্রিট দিয়েই পেট ভাড়ী করি। 


যাতায়াত -১৩০+১১০+২০০

খাওয়া-৬০+১০০+ ট্রিট

থাকা-০০


Day07 


চট্রগ্রাম-বান্দরবান 


সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে ঘুরতে যাই নেভাল তারপর বায়েজীদ বোস্তামীর মাজার ঘুরে দুপুরের মধ্যে বাসায় ফিরে আসি। দুপুরের লাঞ্চ করে রউনা হই বহদ্দারহাট, সেখান থেকে বাসে করে বান্দরবানের ১০ কি.মি আগে জায়গাটার নাম ভুলে গেছি সেখানে গিয়ে রবিনের খালার বাড়িতে গিয়ে উঠি। এরিমধ্যে রবিনকে এড করি অক্সিজেন থেকে সেও আমাদের সাথে তাজিং ডং ও আমিয়াখুম যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। রাতে প্রতিদিনের মত ঘুম 


যাতায়াত - ১৫০ টাকা + ১১০

খাওয়া- ০০

থাকা-০০ 


Day-08 


বান্দরবান টু থানচি 


ঢাকা থেকে আগের রাতেই রউনা হয় আরো ১৪ জন তারা খুব ভোরেই বান্দরবান শহরে পৌছে। তাদের একজনের কলেই আমার ঘুম ভাংগে, তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে রাস্তায় গিয়ে দেখি কোন গাড়ি খরব নাই যে বান্দরবান যাবো।অনেকক্ষণ অপেক্ষা এক ট্রাকের দেখা পাই কোন রকম রাজী করে ১০ কি.মি পথ Hitchhike করি। 


বান্দরবান পৌছে আমাদের টিম তখন ৬+১+১৪= ২১ জনের। ২১ জনকে নিয়ে থানচি বাস স্টান্ড(হাটার পর ৫ মিনিটের) থেকে জনপ্রতি ২০০ টাকায় বাসে করে রউনা হই থানচির উদ্দেশ্যে। চান্দের গাড়িতে জনপ্রতি ৩০০ টাকা খরচ হয় তাই বাসেই রউনা হই তবে সময় বাচাতে চাইলে একটু বারগেইন করে চান্দের গাড়িতে যাওয়া ভাল। বান্দরবান থেকে থানচি যাওয়ার পথ টা অমায়িক লাগে। শৈল প্রপাত-Y Junction-চিম্বুক-নিলগিরি-নিলকন্ঠ-জীবন নগর হিল হয়ে পৌছাই থানচি পথে ৩-৪ জায়গায় ব্রেক দিয়ে NID দেখিয়ে এন্টি করতে হয়েছিল। বান্দরবান যাচ্ছি না মনে হচ্ছিল কাশ্মীর যাচ্ছি এতো করাকরি ছিল। 


থানচি পৌছে সবাইকে লাঞ্চে পাঠিয়ে আমি যাই গাইড রেডি করতে। গাইড রেডি করে ফর্ম ফিলাপ সহ সকল ফর্মালিটি শেষ করার পর শুনতে পাই নাফাখুমে মানুষ মারা গেছে আজকে পার্মিশন হবে না, এই শুনে মাথায় হাত। 


এর মধ্যে এক গাইডকে ১০০০ টাকা ও নৌকার মাঝিদের ৪০০০ টাকা দিয়েছিলাম, যেহেতু আজকে যেতে পারবো কালকেও যাওয়ার সম্ভাবনা নাই তাই তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলাম? তাদের কথা তেল কিনে ইঞ্জিনে ঢুকিয়েছে টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব না! আমার চিন্তা বেড়ে গেল আর টিমের প্রায় ৫০০০ টাকা আটকে গেল। 


অনেক চেষ্টার পর যখন বুঝলাম আজকে বা কালকে আমিয়াখুমের উদ্দেশ্যে পার্মিশন নিয়ে যাওয়া সম্ভব না, এই বুঝতে বুঝতেই সন্ধ্যা পেড়িয়ে যায়। রাতের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে টিমের কাছে পর্যাপ্ত তাবু আছে তবে ভাল সেফ ও সিকিউরিটি সহ যায়গা পাচ্ছিলাম না এর মদ্ধে থানচি ব্রিজের নিচে ২ টা কটেজ টাইপ যাষ্ট শেল্টার বানানো হয়েছে, সেখানে ক্যাম্পিং এর প্ল্যানিং করি এইখানেও পার্মিশন পাইনি। থানচি বাজারে ঘুরেফিরে হোটেল দেখি তাদের বাজেট আকাশচুম্বী ভাড়া চায় ৩০০০ টাকা তার কথা শুনেই বেড়িয়ে যাই। 


বান্দরবান থেকে থানচি বাজার যাওয়ার দিকে থানচি ব্রিজের আগে থাকার হোটেল আছে একটা সেখানে যাই। হোটেলের মালিক বড়ই ভাল মানুষ ও একজন লেখক যিনি থানচির প্রথম লেখক তার সাথে কথা বলে ২১ জন মানুষ জনপ্রতি ১৩০ টাকায় তার হোটেলে থাকি। 


যাতায়াত- ২০০

খাওয়া-৫০+১৩০+১৩০

থাকা-১৩০

গাইড ও নৌকার খরচ পরে এড হবে 


Day-09

রাতেই একটা প্ল্যানিং করে রাখি, সকালে ঘুম থেকে উঠেই গাইডের কল পাই! তার কথা শুনে মনের সকল হতাশতা কেটে যায়। তাজিং ডং সামিট করে আমিয়াখুম ঘুরেই থানচি আসবো সেই প্ল্যানিং শুনে সবাই খুশি তবে আমাদের যেতে হবে অন্য পথে পার্মিশন ছাড়া। 


সকালে থানচির কটেজে গাইড এসে তড়িঘড়ি করে সবাইরে রেডি হতে বলে, সবাই রেডি হয়ে গাড়িতে করে থানচি টু ৮ মাইল এর পথে যাই আর্মি আটকে দেয়। আবার ফিরে থানচি তারপর থানচি থেকে পাহাড়ি উঁচুনিচু পথে ট্রেকিং করে প্রায় ৩ ঘন্টা পর পৌছাই বোর্ডিং পাড়া। বোর্ডিং পাড়ায় গিয়ে রেষ্ট নেই, পানি সংগ্রহ করি। সেদিন কি যে রোদ ছিল আল্লাহ! পাহারে রোদের সময় অনেক রোদ লাগে আর ঠান্ডার সময় প্রচুর ঠান্ডা লাগে। 


টিম যেহেতু বড় বোর্ডিং পাড়া থেকে সামনের পথটা অনেক খাড়া আর কষ্টের তাই ২ টিমে ভাগ হয়ে যাই, যারা স্লো তাদের নিয়ে আমি সহ এক গাইড পিছে আর যারা এভারেজে চলছে তাদেরকে অন্য এক গাইডকে সংগে দিয়ে আগে পাঠিয়ে দেই। 


বোর্ডিং পাড়া থেকে শেরকর পারায় যেতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘন্টা, অনেক রেস্ট নিয়ে চলতে চলতে গিয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। ২ বার ঝুম বৃষ্টি হওয়ার ফলে জোক পাই অনেক, জোকের ভয়ে শেষের পথ টা অনেক তাড়াতাড়ি যেতে পারি। সন্ধায় শেরকর পাড়া পৌছে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করি। সেদিন রেষ্ট নেওয়া ছাড়া কিছুই করার ছিল না সবাই অনেক ক্লান্ত তবুও কেউ হার মানে নি। 


যাতায়াত -০০

খাওয়া-৬০+১০০+১৫০

থাকা+১৫০ 


Day-10 


সকাল প্রায় ৬ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে চা-বিস্কুট খেয়েই রউনা হই তাজিং ডং সামিটের জন্য। শেরকর পাড়া থেকে-তাজিং ডং সামিট করে শেরকর পাড়া পৌছাতে প্রায় সকাল ৯ টা বাজে। 


তাজিং ডং সামিট করে ১ জনের শারিরিক অবস্তা খুবই খারাপ হয় তার জন্য ২ বন্ধুও ঢাকায় ফিরে যাবে বলে সিধান্ত নেয়, তাদেরকে শেরকর পাড়ায় রেখে আমরা আগাতে থাকি দ্যোতং পাড়ার উদ্দেশ্যে। দ্যোতং পাড়ায় যেতে যেতে দুপুর ৩ হয়ে যায়। দ্যোতং পাড়ায় গিয়ে লাঞ্চ করার কোন অপশন না পেয়ে পেটপুড়ে পাহাড়ি পেঁপে খেয়ে নেই। 


দ্যোতং পাড়া থেকে ২.৫ ঘন্টার পথ রেমাক্রি খাল পৌছাই, খালের পানির লেভেল এমন ছিল সাতার না পারলে এই খাল পাড়ি দেওয়া সম্ভব না। সন্ধ্যার ঘনকালো অন্ধকার এর সাথে সাতার না জানা মেম্বার নিয়ে বিপাকে পড়ি। কোন রকম রিস্ক না নিয়ে আবার ফিরে যাই দ্যোতং পাড়ায়,ফিরে যাওয়ার পথ অন্ধকারে জোকের উপদ্রব বেড়েছে ২.৫ ঘন্টার পথ ১.৫ ঘন্টাই পৌছাই সবাই। 

এক রকম আফসোস নিয়েই সবাই ফিরেছিলাম,এই পাড়ায় গ্রুপ নিয়ে তেমন ট্রাভেলার রা থাকেন না তাই তাদের বাংগালী স্বাদের রান্না জানা নেই, নিজেরাই রান্না করে খেয়ে ঘুম দেই। 


খাওয়া- ১০০+৫০+১৫০

থাকা- ১৫০ টাকা। 


Day-11 


আজকে থুইসাপাড়া যাওয়ার পালা, ঘুম থেকে উঠে তেমন তাড়াহুড়া নেই আস্তে ধিরে নাস্তা করে রউনা হই। ২.৫ ঘন্টা পর রেমাক্রি খাল, দিনের বেলা হওয়াতে দেখেশুনে রাস্তা বেড় করে চলতে থাকি। কিছুদুর এগিয়ে যেতেই ভেলা পাই, ভেলায় করে রেমাক্রি খাল পাড় হই। খাল পাড় হয়ে থুইসাপাড়ায় যেতে সময় লাগে ৫০ মিনিট। 


থুইসাপাড়ায় গিয়ে সবাই একদম রিলেক্স হয়ে যায় কিন্তু আমার ভিতর টেনশন কাজ করে। কারন যে মাচায় উঠেছিলাম আমরা এর সামনেই BDR এর ক্যাম্প, তারা আমাদের উপস্তিতি টের পায়। পাড়ায় পৌছে ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে নেই। রিলেক্স করতে করতে যখন রাত ৮ টা বাজে রুম থেকে বেড় হয়েও দেখি বিজিবি চেকিং এর জন্য আসছে। আমাদের দেখে সবাইকে ডেকে একত্রিত করতে বলে, বিজিবি কথা অনুযায়ী নাফাখুমে মানুষ মরে যাওয়ার ফলে আমিয়াখুমের পার্মিশন অফ তাহলে আমরা কিভাবে আসলাম? আমরা অন্য পথে এসেছি শুনেই থুইসাপাড়া ত্যাগ করতে বলে। সকাল হয়ে গেলে থানচি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ, পালিয়ে থুইসাপাড়া থেকে আমিয়াখুম যাবো সেই সুযোগ ও নেই। 


থাকার খরচ-১৫০ টাকা

খাওয়ার খরচ- ৭০+ ১৩০+১৫০ টাকা 



Day-12 


ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে রউনা হই নতুন পাড়া-হরিসচন্দ পাড়া-পদ্মমুখ এর জন্য বেড়িয়ে পড়ি। পাহাড়ে প্রতিদিন একই কাজ ট্রেকিং করে এক গন্তব্য থেকে অন্য গন্তব্যে যাই। দুপুরের মধ্যে পদ্মমুখে পৌছাই, সেখানে আগে থেকেই নৌকা রেডি ছিল সেই নৌকায় করে থানচি ফিরে আসি। 


৫ দিনের ট্রেকিং এ ২ জন গাইডকে ৮০০০ টাকা দেই যদিও কমেই পেয়েছিলাম, গাইডদের টাকা পরিশোধ করে চান্দের গাড়িতে করে রউনা হই আলিকদমের উদ্দেশ্যে ভাড়া নেয় ৩৫০০ টাকা। থানতি থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে উচু রাস্তা হয়ে ডিম পাহাড় দিয়ে আলিকদম পৌছে যাই। আলিকদম থেকে আরেকটা চান্দের গাড়ি নেই চকরিয়া পর্যন্ত ভাড়া নেয় প্রায় ১০০০ টাকা, চকরিয়া পৌছে বাসে উঠি কক্সবাজারের জন্য ৫০ টাকা ভাড়ায়। 


রাতে কক্সবাজার পৌছে পরিচিত হোটেলে (Bay Queen)ফ্ল্যাট নেই জনপ্রতি ১৫০ টাকার মদ্ধে, রাতের খাওয়া দাওয়া করে ঘুম সবাই।

খাওয়া-১০০+

যাতায়াত-গাইড-৪০০+৩০০ 

থাকা-১৫০


Day-13 


ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে হোটেলের সামনে থেকে অটো নেই কলাতলী মোড়ে যাই। কলাতলী থেকে কিছুক্ষন পর পর টেকনাফের উদ্দেশ্যে নিল দড়িয়া নামের মিনি বাস ছেড়ে যায়, ভাড়া-১৭০ টাকা সময় ১ ঘন্টা ২০ মিনিট। 

  

নিল দড়িয়া তে চড়ে মেরিন ড্রাইভ হয়ে যেতে লাগলাম টেকনাফ, প্রায় ১২ টার দিকে পৌছে যাই টেকনাফ ০০ পয়েন্ট। অটো নিয়ে যাই ট্রলার ঘাটে, গিয়ে দেখি একটাও ট্রলার নাই তবে জুম্মার নামাজের পর একটা মালবাহী ট্রলার ছাড়বে ভাড়া দিতে হবে জনপ্রতি ৩০০ টাকা। যেখানে নরমাল ভাড়া ২২০ টাকা আমরা স্পেশাল ট্রলারে যাচ্ছি তাই ভাড়া বেশি। নামাজের পর লাঞ্চ করে ঘাটে যাই, গিয়্র দেখি জোয়ারের পানি আসে নাই তাই ট্রলার ছাড়তে দেড়ি আছে। 


শীত কালে(অক্টোবর/নভেম্বর - মার্চ/এপ্রিল) বাদেই কেবল ট্রলারে বাজেট ট্রাভেলের জন্য সেন্টমার্টিন যাই আমরা, ঢাকা বা অন্য কোথাও থেকে ট্রলারে যেতে চাইলে সকাল ৭ টার মদ্ধে ঘাটে থাকবেন। স্পিড বোটেও যাওয়ার সুযোগ আছে ৬০০ টাকা ভাড়া নিবে। 


৩ টার দিকে চ্যানেলে পানি আসার পর ট্রলার ছাড়লো।কোষ্টগার্ড এন্টি শেষে ট্রলার যখন সাগরের দিকে যাচ্ছিল- আমি তখন পূর্বের প্রায় ৪ বছর আগের ট্রলারে সেন্টমার্টিন ভ্রমনে গিয়ে সাগরের মদ্ধে প্রায় ৪ ঘন্টা আটকে থাকার কাহিনী - অন্যদের সাথে বলছিলাম, এই বলতে বলতে ২০ মিনিট যাওয়ার পরেই ইঞ্জিনের টুকরা জাল বাধে। ট্রলার নোংগর ফেল মাঝিভাই ঝাল খুলতে খুলতে জোয়ারের টানে ৫ কি.মি সামনে চলে যাই। 


প্রায় ঘন্টা খানেক চেষ্টা করার পরেও ট্রলার ঠিক করতে পারে নাই, ভাগ্য ভাল ছিল কাছেই একটা ট্রলার যাচ্ছিল তাদের হেল্পে টেকনাফ ঘাটে পৌছে যাই। 


ঘাট থেকে বেড় হয়ে সামনে একটা হোটেল পাই ২ রুম প্রায় ১২০০ টাকায় ভাড়া নেই। তখন আমাদের মেম্বার ছিল ৭ জন, হতাশ মন নিয়েই রুমে ফিরে যাই। ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুম দেই। 


যাতায়াত-১০+১৭০+১০+৩০০+১০

খাওয়া-৬০+১২০+১২০

থাকা-১৭০ টাকা 



Day-14 


সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ঘাটে যাই, গিয়ে দেখি আবারো জোয়ার আসার অপেক্ষায় আছে ট্রলার দুপুর প্রায় ২ টার দিকে ট্রলার ছাড়ে। বিকাল প্রায় ৫.১০ এর দিকে সেন্টমার্টিন গিয়ে পৌছাই। ট্রলারে যাওয়ার পথে মায়ানমার পাহাড় গুলা খুব কাছে আর ক্লিয়ার দেখতে পাই যেটা শীতের দিনে গেলে দেখা যায় না তেমন। 


সেন্টমার্টিন যেতে যেতে এক রিসোর্ট মালিকের সাথে পরিচিত হই,তার রিসোর্টেই (Heaven Beach Resort Saintmartin) চেক ইন করি। ফ্রেস হয়ে লাঞ্চ করে নেই, উত্তর বীচের পাসেই কটেজ হোয়াতে বেশি কষ্ট করে বিচে যাওয়া লাগে নি। 


ট্রিপ করতে করতে একদম ফায়নাল ডেষ্টিনেশনে চলে আসি আর কিছুটা রেষ্ট নেওয়া ও হয়ে যাবে সেন্টমার্টিন এ। অনেক রাত পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রুপের সাথে গান বাজনা করি, আড্ডাদেই। ডিনার করে ঘুম

যাতায়াত-০০

খাওয়া-৬০+১২০+১৫০

থাকা-১৭০

২ রাতে সবার জন্য ২ রুম ২০০০ দিয়েছিলাম সীজন নাই বলে কমেই হয়েছে।


Day-15 


ঘুম থেকে উঠতে উঠতেই বেজে যায় ১০ টা, ফ্রেস হয়ে রিলেক্সে বিচে গিয়ে ছাতার নিচে বসে বসে মায়ানমারের পাহাড় ও নীল পানি দেখি। পানিতে কিছুক্ষন লাফালাফি করে রুমে ফিরে যাই, খাওয়া দাওয়া করে রেষ্ট নেই।সন্ধায়

সানসেট দেখে আর রুমে ফিরে যাই নি একদম রাতের খাওয়া দাওয়া করে রুমে যাই। 


আপনারা ছেড়া দ্বীপ যেতে পারেন ট্রলারে গেলে আসা-যাওয়া ১৫০ টাকা ও গাম বোটে গেলে ২০০ টাকা স্পিড বোটে গেলে ৩০০ টাকা লাগবে। বাংলাদেশের লাষ্ট ল্যান্ড হলো ছেড়া দ্বীপ তাই সেন্টমার্টিন গেলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন। ছেড়া দ্বীপ ভাটার সময় গেলে বাইকে বা সাইকেলে করেও যেতে পারবেন।

আগের দিনের মত করে রিলেক্সে সময় কাটাতে থাকি।

যাতায়াত-০০

থাকা-১৭০

খাওয়া-৫০+১২০+১২০ 


Day-16 


ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে ঘাটে যাই ২২০ টাকায় টিকেট নিয়ে ট্রলারে চড়ে যাই টেকনাফ। ৩ ঘন্টার মধ্যে টেকনাফ পৌছাই ঠিকি কিন্তু এমন বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে এইবারের ট্রলার যাত্রা কারন প্রচণ্ড রোদের মদ্ধে সাগরে চলতে চলতে আমার শরির ঘামতে ঘামতে পানি শুন্যতায় পরে যায় । 

ঘাট থেকে অটোতে করে যাই ০০ পয়েন্ট নিল দড়িয়ায় করে ১.২০ মিনিটে কক্সবাজার পৌছাই ভাড়া-১৭০ টাকা। 


কক্সবাজারে সানসেট দেখে ছাতার নিচে সময় কাটাই, রাতের ৯ টার বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রউনা হই ভাড়া -৮০০ টাকা।

যাতায়াত -২২০+১০+১৭০+৮০০

খাওয়া-৫০+১০০+১০০

থাকা-০০ 


আমার খরচের হিসাব যোগ করলে ১৬০০০ এর কম হবে তবে আমার অনেক জায়গাতেই থাকার ও খাওয়ার খরচ লাগেনি, আপনি গেলে এই খরচ হবে তখন ১৬০০০ এর সম্ভব হবে। 


Day-17

আলহামদুলিল্লাহ ঢাকা


#তাজিং_ডং_কিভাবে_যাবো 

#আমিয়াখুম_যেতে_কেমন_খরচ

#সেন্টমার্টিন_ভ্রমন

#বান্দরবান #বাজেট_ট্রাভেল

©Md Shahadat Hossain 


রিপোর্ট: শেখ সাইদুর ইসলাম

ঢাকা।


Comments

Popular posts from this blog

গোস্ট অফ কেটু!! পৃথিবীর সবথেকে রহস্যময় ভুতূরে পর্বতশৃঙ্গ 😮😲

কক্সবাজার সেন্টমার্টিন বাজেট ট্যুর।

কে এই ড.জাফর উল্লাহ? আসুন কিছু তথ্য ড. জাফরুল্লাহ সম্পর্কে একটু জেনে নিই।