এক ট্রিপে ১৫ দিনে পাহাড়, বরফ, মরুভূমি, লেক, তাজমহল সহ ভারতের সেরা কিছু ডেশটিনশন ভ্রমন।

 




এক ট্রিপে ১৫ দিনে পাহাড়, বরফ, মরুভূমি, লেক, তাজমহল সহ ভারতের সেরা কিছু ডেশটিনশন ভ্রমন। 


১৫ দিনে খরচ হয়েছিল জনপ্রতি ১৫০০০ টাকা,খরচ টা যার যার Planing & Purchase এর উপর ডিপেন্ড করে। লেখাটা খুব বড়ো তবে কাজে লাগবে, একবারে পড়ে শেষ করতে না পাড়লে সেভ করে রাখুন অন্যসময় শেষ করবেন ইনশাআল্লাহ। 


এই ট্রিপে কখনো সাদা বরফ দেখার স্বপ্নে ছুটেছি ভারতের Best Honeymoon & Ski Destination Auli, কখনো বা পাকিস্তান বর্ডারের পাশে মরুভূমিতে উটের পিছে চড়েছি। বছরের শেষ বিকেল টা সম্রাট শাহজাহানের ভালবাসার 'আগ্রার তাজমহল ' এ নদীর পারে বসে সময় কাটিয়েছি। খাজা মইন উদ্দিন চিশতী ঐতিহাসিক আনা সাগর লেকের সানসেট দেখে আল্লাহর পানে কেঁদেছি। হৃসিকেশের গংগা নদিতে রাফটিং করেছি,ভারতের সবচেয়ে বড় রোপওয়েতে চড়েছি জোদপুরের ব্লু সিটিতে ধাবায় খেয়েছি কত শত গল্প জমেছে এই ট্রিপের। 


এক্সট্রিম কিছু কাহিনী ছিল যেমন 

দিল্লীতে স্টেশনে ঘুমানো, হৃসিকেশের Warm Waiting Room এ ফ্রিতে ঘুমানো, ঠান্ডার রাফটিং করা,১৮০০ কি.মি পথ ট্রেনের টয়লেটের পাসে বসে পাড়ি দেওয়া। পড়তে থাকুন ভাই.... 

আমাদের রুট ছিল 


#কলকাতা_দিল্লী_হৃষিকেশ_জোসীমাঠ_অলী_জোসীমাঠ_হৃষিকেশ_দেরাদূন_আগ্রা_জয়পুর_আজমীর_জয়সাল্মীর_জোধপুর_কলকাতা 


Day-00 


ডিসেম্বরের কনকনে শিতের রাতে ঢাকা থেকে পুর্বাশা পরিবহনে করে দর্শনা বাজার, রাতের ৯.১৫ এর বাসে আমরা ৯ জন মিরপুর মাজার রোড কাউন্টার থেকে নন এসি ৪০ সিটের বাসে উঠে পরি,ভাড়া জনপ্রতি ৪৫০ টাকা। 


Day-01 


সকাল ৫.৪০ এর দিকে দর্শনা বাজার নামি,বাজার থেকে রিকশায় করে দর্শনা বর্ডার জন প্রতি ৩০ টাকা করে, সময় লাগবে ২০ মিনিট,ইমিগ্রেশন শেষ করে হেটে হেটে গেদে ষ্টেশন, ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন শেষ করে পরিচিত মানি এক্সচেঞ্জ থেকে রুপি করে ৮.৪৭ এর গেদে-শিয়ালদহ এর ট্রেনে চড়ে যাই।ভাড়া জন প্রতি ৩০ রুপি, আমরা কলকাতা নিউ মার্কেট যাবো তাই ২৫ টাকার টিকিট কিনি দমদম পর্যন্ত। প্রায় ২.৪৫ মিনিট পর গেদে থেকে দমদম নামি।আমাদের প্রত্যেকের কাছেই কিন্তু ভাড়ি ভাড়ি ব্যাগ এই ব্যাগ নিয়ে প্রাইভেট কারে চড়া তেমন সুবিধার হবে না এবং খরচ বাচবে বলে দমদম নেমে মেট্রোতে করে এসপ্ল্যানেড ১০ রুপি জনপ্রতি। এসপ্ল্যানেড থেকে বেড় হলে পাসেই নিউমার্কেট, শুরু করলাম হাটা এসপ্ল্যানেড থেকে হেটে হেটে মারকুইস স্ট্রিট, এখানে এসে (কলকাতা-দিল্লী) টিকেট ম্যানেজের পায়চাড়া লাভ হলো না কোন কিছুতেই, অনেক এজেন্সিরর কাছেই গিয়েছি সবার কাছেই এমন ভাব করেছি আমি তার কাছ থেকেই টিকেট নিবো সেটা যে কোন কোচেই হোক যত টাকাই হোক। যত জনের কাছেই গিয়েছি সবাই ৩ টায়ার এসি তে কনফার্ম টিকেট দিতে পারবে কিন্তু আমি তো এসি স্লিপারে যাবো না মশাই, আমি যাবো নন এসি স্লিপারে শেষমেশ এই বলে বেড়িয়ে পড়েছি প্রতি এজেন্সির অফিস থেকে যে 'আমার গ্রুপের সবার সাথে কথা বলে জানাচ্ছি' কে যায় আর ওর দোকানে। এভাবে করতে করতে যখন দেখলাম আজকে এখানে এভাবে টিকেট পাবো না তারপর গেলাম ধর্মতলা থেকে বাসে করে ৮ রুপি জনপ্রতি ফেয়ারলি প্লেস। সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের দেশীয় সেলিব্রেটির মেলা প্রথমেই দেখলাম বাপ্পা মজুমদার কে টিকেট কাটতে আসছেন বউ কে নিয়ে যাবেন দার্জিলিং ভ্রমনে, তারপর দেখা হল সাংবাদিক ফাহিম ভাই এর সাথে তিনি যাবেন দিল্লী হয়ে কাশ্মীর তার সংগে কিছুক্ষন আলাপচারীতার পর, আমাদের সিরিয়াল গেলাম কথা বলতে আজকে কলকাতা -দিল্লীর নন এসি স্লিপারের টিকেট লাগবে দাদা মশাই ৪ চোখ দিয়ে আমার দিকে তাকালেন আর বললেন আজকের টিকেট হবে না তোমার আগের জন তার গ্রুপের জন্য আজকের শেষ টিকেট নিয়ে গেছে। আমার মাথা প্যারায় ভনভন করতেসে কি করবো এখন! আমি আমার গ্রুপের প্রত্যেক্কেই আগে থেকে বলে এসেছি যদি স্লিপারের টিকেট না পাই তাহলে জেনারেলে যেতে পারবেন তো? জেনারেল টিকেটের সিট হলো আমাদের দেশের ট্রেনের শোভন সীট তাই ভেবে চিনতে সবাইকে আগে থেকেই সব বলে কয়ে একটা সুন্দর গ্রুপ মেক করে এই ট্রিপে এসেছি। ফেয়ারলি প্লেস থেকে টিকেট না পেয়ে আরো একবার নিরাশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। হাটা শুরু করলাম ফেয়ারলি যেটি ঘাটের উদ্দেশ্যে নদীর হাওয়া খেয়ে মাথা ঠান্ডা করার জন্য, ফেয়ারলি যেটি ঘাট থেকে লঞ্চ যায় হাওড়া ষ্টেশন সংলগ্ন যেটি ঘাটে সময় লাগে ৬-৭ মিনিট ভাড়া ৫ রুপি।হাওড়া গিয়ে সোজা জেনারেলের টিকেট কেটে ফেলি কালকা মেইলে যাবো ফাইনালি এইটা ডিসিশন নেই সবাই। হাওড়া-অল্ড দিল্লী কালকা মেইলের জেনারেল এর টিকেট জনপ্রতি ৩৪০ রুপি সময় ২৫ ঘন্টা। ট্রেন হাওড়া থেকে ছাড়বে ৭.৪০ মিনিটে আমরা হাওড়া ষ্টেশন পৌছাই প্রায় ২ ঘন্টা আগে, হাতে ঘড়ির কাটা বলছে সময় আছে ঘুরে নিতে পারো হাওড়া। মোরাররফ ভাইকে সব ব্যাগ গুলার দায়িত্ব দিয়ে আমরা বাকি ৮ জন বেড়িয়ে পড়ি ষ্টেশন ও হাওড়া বিজ্রের আশপাশ ঘুরতে। ভাইকে একা রেখে এসেছিলাম তিনি মোবাইলে কাজ করবেন এবং আমাদের ব্যাগ পাহাড়া দিবেন এক কাজে ২ কাজ। ট্রেন ছাড়া ১ ঘন্টা আগেই প্লাটফর্মে হাজির আমরা কিন্তু ট্রেনের দেখা মিলছে না।সেদিন ৭-৮ টা ট্রেনে ক্যান্সেল হইসে এরমদ্ধে হাওয়া-দেরাদুন এর রাতের দুন এক্সপ্রেস ও ক্যান্সেল আবার দুপুরে ১ টার কুম্ভো/উপাসনা ও প্রায় ১২ ঘন্টা লেটে ছাড়বে। সব মিলিয়ে আমার মাথায় রিতিমত চিন্তার পাহাড় নেমে আসতেছিল।ট্রেন আসার বাকি আরো ১ ঘন্টা, আমি আরো সাথে ২ জনকে নিয়ে গেলাম রাতের খাবার আনতে বাহিরে জাওয়ার সময় ইনফরমেশন বুত থেকে আপদেড পেলাম ট্রেন টাইম মতই ছাড়বে। খাবার পার্সেল করতে করতে কখন যে ৭.৩০ বেজে গেছে খেয়ালই নাই আমার। হটাৎ ঘড়িতে চোখ পড়ায় দেখলাম, আমি তোরিঘোরি করে দৌড় দিলাম ষ্টেশনে ও বাকি ২ জনকে বললাম তোমরা যলদি খাবার নিয়ে আসো আমি গ্রুপের বাকিদের নিয়ে রেডি হই। প্লাটফর্মে গিয়ে দেখি ট্রেন হাজির আর বাকি মেম্বার রা আমাদের জন্য ট্রেনে উঠতে পাড়ছে না। ট্রেন ছাড়ার প্রায় ৩ মিনিট আগে সবাই একত্র হই, ট্রেন ছাড়বে ছাড়বে এই অবস্থায় আমরা সবাই ট্রেনে উঠি। টিকেট যেহেতু জেনারেল কোঠার অন্য বগিতে ভ্রমন করতে পারবো না। ট্রেনের শেষে জেনারেল বগি,ব্যাগ নিয়ে শুরু থেকে একদম শেষ বগিতে গিয়ে থামি তখন আমরা জেনারেল বগিতে যেতে পারিনি, স্লিপারের সাথে জেনারেল বগির কানেক্ট ছিল না, পরের ষ্টেশনে নেমে যেতে হবে, সবাই সেখানেই বসে গেলাম লেটিয়ে।কিছুক্ষন পর কোচ টি টি আসলো আমাদের পরিস্তিতির কথা খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বললাম। টি টি TT আমাদের সব কথা শুনে আশ্বাস দিল চিন্তা করো না তোমাদের জন্য যত টুকু পারি হেল্প করবো তোমরা আমাদের মেহমান। এর কিছুক্ষন বাদে আসলো আর বল্লো জন প্রতি ৫৫০ রুপি করে লাগবে জরিমানা সহ তাহলে স্লিপারে সিট দিতে পারবো, আমরা না করি নি সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফেললাম।এমন এক টাইম ২দিন পর খ্রিষ্টান দের বড় দিন ও সামনে ইয়ার ক্লোস সবাই ঘুরতে বেড়িয়েছে। যাক রাত ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পার করলাম।


#কলকাতা_দিল্লী_হৃষিকেশ_জোসীমাঠ_অলী_জোসীমাঠ_হৃষিকেশ_দেরাদূন_আগ্রা_জয়পুর_আজমীর_জয়সাল্মির_জোধপুর_কলকাতা 


Day-02 


ট্রেন চলছে তার গতিতে...

শীতের দিন ঘুম ভাংতে দেড়ি হল কিছুটা, দেড়ি হলেও কোন সমস্যা ছিল না কারন সারাদিন ট্রেনেই থাকতে হবে।

ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে সীটে এসে বসলাম। আমাদের পাসেই উঠেছিল আসানসোল এর এক ফ্যামিলি, কর্তা ছিলেন ভ্রমন পিপাসু তিনি ও যাচ্ছেন ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরতে দিল্লী।তার সংগে আলাপ করতে করতে সারাদিন কেটে গেল। ট্রেনের একপাশ থেকে অন্যপাশ যেদিকে ভাল লাগে বসি কথা বলি মানুষের সাথে সময় তো কাজে লাগাতে হবে। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত ট্রেন চলছে আপন গতিতে..কিছুক্ষন পর পর ব্রেক দেয় এটা ছিল বিরক্তিকর।এভাবে করতে করতে রাত প্রায় ১২ টায় আমাদের অল্ড দিল্লী নামিয়ে দেয়। ট্রেন থেকে নামতে নামতে হাত পা বড়ফ হয়ে যাচ্ছিল তখন তাপমাত্রা ছিল ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ষ্টেশন থেকে বেড় হতে না হতেই গাড়ির ড্রাইবাররা ডাকি ডাকি। সবাইকে এভোয়েড করে বাহিরে বেড়িয়ে পড়লাম ডিনার করার জন্য। ডিনার শেষ করে সোজা ষ্টেশন সারারাত নিশ্চিন্তে শান্তির ঘুম দিয়ে কাটিয়ে দেয় সবাই। 


Day-03 


সকালে ঘুম থেকে উঠেই ক্লক হাইজে ব্যাগ প্রতি ৩০ টাকা করে দিয়ে ২৪ ঘন্টার জন্য সবার ব্যাগ রেখে দেই। ব্যাগের সিকিউরিটি হয়ে গেছে সবাই ফ্রি আমরা, মেট্রো তে করে প্রথমে যাই কাশ্মীর গেট দিল্লী-হৃসিকেশ এর বাসের খবর নিতে। খোজ খবর নেওয়া শেষে কাশ্মিরি গেট মেট্রো থেকে যাই রেডফোর্ড

তারপর রেডফোর্ড ঘুরে জামে মসজিদ। জামে মসজিদ ২নং গেটের পাশেই বিভিন্ন রকমের গোস্ত রান্না দিয়ে দুপুরের খাবার খাই।এরপর যাই কুতুব মিনার এরপর প্লান অনুযায়ী সন্ধায় যাই ইন্ডিয়া গেট। ইন্ডিয়া গেটে ঘুরে চাঁদনী চক ওল্ড দিল্লী স্টেশন থেকে ব্যাগ নিয়ে কাশ্মিরি গেট বাস স্টেশন ISBT বললেই হবে।আর বলে রাখি মেট্রো তে ঘুরতে আমাদের জন প্রতি প্রায় ১২০/১৩০ টাকা খরচ হয়েছে। কাশ্মিরি গেট থেকে হৃসিকেশ এর বাস ছাড়ে রাত ৯ টায় ভাড়া ৩৭৫ টাকা সময় লেগেছে আমাদের ৫ঘন্টা ৩০ মিনিট। প্রতি ঘন্টায় বাস পাবেন লাস্ট বাস ১ টা পর্যন্ত। 


Day-05 


রাত ২ টা ৩০ এর দিকে আমাদের হৃসিকেশ নামিয়ে দেয় বাস। এত রাতে নতুন এক হিল স্টেশন অন্য রকম লাগছিল। লোকাল একজনকে পেলাম কথা বার্তা ভাল লেগে যায়, তার কাছ থেকে ইনফো নিতে থাকি।এরমদ্ধে অনেকেই Tata Somo দিয়ে হৃসিকেশ জোসিমাঠ যাওয়ার জন্য রেট বলছিল।ভাড়া জনপ্রতি বাসের তূলনায় ভাল মনে হয়েছে তাই সোমোতে যাওয়ার ডিসিশন নেই।ভাড়া জনপ্রতি ৫৫০ টাকা হৃসিকেশ-জোসিমাঠ আর বাসে করে আসলে ৩৬০ রুপি।

বাস-ট্রেন-মেট্রো-এবার যাত্রা শুরু করলাম ভোর ৪.২৫ এর দিকে Tata Somo তে। হৃসিকেশ থেকে জোসিমাঠের পাহাড়ি পথ টা ছিল মন ভোলানো, অন্তর জুড়ানো। আকা বাকা পথ বিশাল বিশাল পাহাড় এই রোডে চলতে চলতে ওয়েষ্ট বেংগলে এর কালিম্পং,লাদাখের নুব্রার ফিল পেয়েছি।উত্তরখান্ডকে একটু অন্যরকম লাগলো। আমরা প্রায় ১২ ঘন্টা পর সারে চারটার দিকে জোসিমাঠ পৌছাই।

জোসিমাঠ যেতে চামোলি তে ড্রাইবার চেঞ্জ হয়, নতুন ড্রাইভার নাম বাচ্চান তার হেল্পেই খুব কম দামে ৯ জনের থাকার ব্যবস্থা হয়ে যায়। আমাদের জন্য জন প্রতি ২০০ টাকায় এক রুমে ৭ বেডের রুমে থাকার ব্যবস্থা হয়ে যায়।রুমে ব্যাগ রেখে আর দেড়ি নয় বেড়িয়ে পরি জোসিমাঠ কে দেখার জন্য। জোসিমাঠ হিল ষ্টেশন আমাকে দার্জেলিং,সিমলা,মানালী,লেহ এর চেয়ে ডিফ্রেন্ট ফিল দিয়েছে। রাস্তায় হাটতে হাটতে লোকালদের ক্রিকেট খেলা উপভোগ করলাম, বাজার থেকে নিচের দিক লাক্সমি মন্দির সেখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে হোটেলে চলে যাই। 


Day-06 


সকালে ঘুম ভাঙে ৭ টায়, উঠে যাই ব্রাশ করতে রুমের বাড়ান্দায় সেখানে গিয়ে যা দেখি অমায়িক লাগে আমার কাছে লিখে এই সুন্দর ভিউর বর্ননা আমার দেওয়া সম্ভব না,জোসিমাঠের লাইভ টা দেখতে পারেন দেখে ফিল নিন। রাতেই অলী যাওয়ার জন্য গাড়ি বুক ছিল জন প্রতি ২০০ টাকা করে Tata Somo তে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে অলির জন্য রউনা দেই ৩০ মিনিটে গাড়ি আমাদের অলি থেকে ৪ কি.মি আগে নামিয়ে দেয়। সামনে নাকি গাড়ি আর যাবে না। ৪ কি.মি পথের শর্টকাট ছিল পাহাড়ি পথ ১.৫ কি.মি আমরা সে পথেই চললাম।প্রতিটা স্টেপেই ছিল সাদা বড়ফের ছোয়া। বরফের উপর দিয়ে হাটতে হাটতে উপরে ক্যাম্পিং সাইটে গিয়ে রেষ্ট নেই কিছুক্ষন,এখানে কলকাতার ৫ জনের একটা টিমের সাথে পরিচিত হই তাদের সাথে আলাপচারিতা হয়। রেস্ট নিয়ে উপরের দিকে যেতে যেতে কিছু ছবি ও ভিডিও ক্যাপচারে আমি অন্য দিকে চলে যাই।কিছুক্ষন বাদে হটাত আমি গ্রুপ ছাড়া হয়ে যাই। কলকাতার এক ছেলে বলছিল তোমার গ্রুপের সবাই রোপওয়ে দিয়ে উপরে যাচ্ছে।আমি রোপওয়ে দিয়ে না গিয়ে টেকিং যেতে থাকি।যত উপরে যাচ্ছিলাম ঠান্ডাও বেশি লাগছিল এর মদ্ধে ভুলে জ্যাকেট, কানটুপি ও হ্যান্ডগ্লাবস ক্যাম্পিং সাইটে রেখে আসি। কিছুটা বিপাকেই পরে যাই কি করার আমি উপরে যাবোই যেতে হবে গ্রুপের সবাই উপরে লেকের পাশে। ঠান্ডায় শরির জমে যাচ্ছিল ১ ঘন্টা পর সবাইকে উপরে গিয়ে দেখতে পাই,আমি উপরে থাকতে পারছিলাম না এর মদ্ধে চেয়ার লিফট (রোপওয়ে) বন্ধ হওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছিল। চেয়ার লিফতে করে নিচে নামি সেই ক্যাম্পিং সাইটে।সন্ধায় ক্যাম্পফায়ার করে শরির গরম করে নিচে নেমে যাই, ড্রাইভার সারাদিন ধরেই আমাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। ড্রাইভার সেই আগের বাচ্চান দাদা।

চেয়ার লিফট দিয়ে আসা-যাওয়া ৩০০ টাকা

ক্যাবল কারে আসা-যাওয়া -৭৫০ 

টিকেটের মেয়াদ ৩ দিন অলিতে উপরে থাকলে চাইলে তাবতে ও হোটেলে থাকতে পারবেন।

তাবুতে জনপ্রতি এখন রেট চলছে ১০০০ রুপি ২ বেলা খাবার সহ। হোটেলে মিনিমাম ৪ জনের জন্য ৩০০০-৪০০০ রুপিতে পাওয়া যাবে রুম। 

আমরা ২ রাত জোসিমাঠেই ছিলাম অলীর ফিল সারাদিন নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে চলে আসি। এই রাতে মাস্তি হয় আনলিমিটেড। 


Day-07 


সকাল ৭.২০ এ ঘুম থেকে উঠেই বাস স্টান্ড, পায়ে হাটার পথ। ৮ টার বাসে করে রউনা হই হৃসিকেশ। বাসে বসে পাহাড় গুলাকে আরো ভাল করে দেখা যাচ্ছিল। পাহাড়ি পথেই আমাদের বাসের সাথে সাথে একে বেকে চলছিল নদী। হৃসিকেশ পৌছাতে পৌছাতে দেরাদূনের লাস্ট বাস ছেড়ে চলে যায়। এই রাতে আর দেরাদূন গিয়ে কোন লাভ নেই তাই হৃশিকেশ থেকে যাই। এই রাতে থাকার জন্য খরচ হয়েছে নাম মাত্র ৫০ টাকা, হৃসিকেশ বাস স্টান্ডে ওয়েটিং রুমে ফ্রি তে থাকার ব্যবস্থা আছে। কম্বল,তোসক সহ টয়লেট সব কিছুই ছিল। হৃসিকেশে গংগা নদীতে রাফটিং করার কোন প্লান ছিল না কিন্তু অনেকের ইচ্ছা ছিল বলেই রাতেই বুকিং দেই। ১৮ কি.মি রাফটিং জন প্রতি ৩৫০ টাকা করে লাগে। রাফটিং করেছি যার মাধ্যমে তার বাইকে করেই চলে যাই ত্রিভেনি ঘাট। ত্রিভেনি ঘাটে একটা ব্রিজ আছে এই লাইটিং টা মন কেড়েছে। গংগার পানির স্রোতের আওয়াজ আর ব্রিজের লাইট সময় টাকে মুল্যবান করে দেয়। ওয়েটিং রুমে পরিচয় হয় দিল্লীর এক সোলো ট্রাভেলার এর সাথে। তাকে আমার দেশে আসার আমন্ত্রণ জানাই, ছবি ও ভিডিওর দেখাই সংগ্রহ সালা থেকে বাংলাদেশের। এই ছেলে ও সেন্টমার্টিন এর প্রেমে পরে যায়। রাতটা খুব সেফ ভাবেই ওয়েটিং রুমে পাড় করি। 



Day-08 


ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে, খাওয়া শেষ করেই রওনা হই এজেন্সির গাড়িতে করে সিবভুমি থেকে শুরু করি রাফটিং। গাড়ি থেকে খালি পায়ে নেমে এতো ঠান্ডা লাগছিল হেটে যে নদীর পারে যেতে যেতে অবস্থা খারাপ। গাইড আমাদের ব্রিফিং দিয়ে শুরু করলো প্রথম পয়েন্টে লাফ দিয়ে পানিতে নেমেই মনে জীবনের শেরা এডভেঞ্চার এর ফিল পাই। এতো ঠান্ডা লাগছিল তবুও ১ কি.মি এর বেসি ভেসে ভেসে সামনে যাই।২ঘন্টা ৩০ মিনিটে আমাদের রাফটিং শেষ হয়। রাফটিং শেষ করে রওনা হই বাসে করে হৃসিকেষ-দেরাদূন, জনপ্রতি ৫৬ টাকা ভাড়ায়।দেরাদূন গিয়ে এমন সময়ে পৌছাই মুসোরী গিয়ে আর ডেলাইট পাবো না তাই তাই মূসৌরী বাদ দেয়।আপনি গেলে মুসৌরী গিয়ে ঘুরে আসবেন অবশ্যই। রাত ৬ টায় দেরাদূন ISBT. থেকে বাসে করে আগ্রার উদ্দেশ্যে রওনা হই। দেরাদূন-আগ্রা ৩৬০ টাকা জনপ্রতি। 


Day-09 


গাড়ি আমাদের

আগ্রা ঈদগাহ বাস স্টেন্ড নামিয়ে দেয় সকাল ৫.২০ এ। অটো ড্রাইভার রা অতিরিক্ত ভ্রদ্রতা ও ভাল ব্যবহার দেখিয়ে আমাদের কম দামে হোটেল ম্যানেজ করে দিবে বলে আধা ঘন্টা এদিক থেকে ওদিক, এক হোটেল থেকে অন্য হোটেল নিয়ে যায় কোন হোটেলেই রুম খালি পাইনি। দুরুদ শরীফ পড়তে থাকলাম, আল্লাহ রহম করলো শেষমেষ হাজী সাহেবের Crown Palace এই ২০১৮ সালের শেষ রাত কাটানোর ঠিকানা হল ভাড়া জনপ্রতি ২১১ টাকা। হোটেলে উঠে রেষ্ট নিয়ে সারাদিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করলাম তাজমহল,আগ্রা ফোর্ট(এন্টি টিকেট- ৫০ টাকা),মমতাজ গার্ডেন,ফতেহপুর শিকরী-৪০ টাকা টিকেট,মেহতাব বাগ(আগ্রা রিভার ভিউ-৪০ টাকা)। সারাদিনের জন্য গাড়ি ভাড়া জনপ্রতি ২৩৩ করে পরে। সকাল ১০ টায় শুরু করি আগ্রা ভ্রমন প্রথমেই চলে যাই UP ও Rajashtan এর বর্ডার এরিয়া ফতেহপুর শিকরী তে। ফতেহপুরে সম্রাট আকবরের ইতিহাস ও ঔতিহ্যে ভরা সব স্থাপনা দেখে আশ্চর্য হই কিভাবে এতো বছর আগে এতো সুন্দর স্থাপনা তৈরী করেছেন সম্রাট। তারপর আসি #আগ্রা_ফোর্ড দেখতে, যেখানেই যাই সাদা চামড়ার মানুষের ভিড় লেগেই আছে সন্ধ্যা হওয়ার ১ ঘন্টা আগেই সেখান থেকে বের হয়ে যাই মেহতাব বাগ যাওয়ার জন্য। বছরের শেষ সূর্য ডোবা দেখবো বলে। সারাদিনের ঘুরাঘুরি শেষ করে লোকাল মার্কেট এ যাই কেনাকাটার জন্য তারপর পরদিনের আগ্রা-জয়পুরের বাসের টিকেট জনপ্রতি ২৫০ টাকা করে কেটে হোটেলে চলে যাই। 


Day-10 


সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠি আমাদের বাস ৮.৩০ এ, অটো ১০ টাকা করে দিয়ে স্টান্ড এ যাই। স্টান্ডে গিয়ে শুনি আরেক কথা নতুন বছরের প্রথম দিন বলে গাড়ি ৮.৩০ এর পরিবর্তে ১০.৩০ এ ছাড়বে, সব ড্রাইভাররা মদ খেয়ে টাল।যাই হোক কি করার বাসের অপেক্ষায় রইলাম ১০.১৫ তে বাস আসলো। আগ্রা-জয়পুর যেতে সময় লাগে ৪ঘন্টা ৪.৩০ মিনিট আমাদের বাস নামিয়ে দেয় ৬ ঘন্টা পর, সারাটা দিন আমাদের বাসেই কেটে যায়। জয়পুর গিয়ে আর কোন টুরিস্ট স্পট দেখার সময় ছিল না আর দেখতে চাইলে আরো ১ দিন বাড়বে তাই জয়পুর সাইট সিয়িং বাদ দেই।জয়পুরের টুকটাক কেনাকাটা ও স্পেটাল বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য যাই মোহাম্মদিয়া হোটেলে। জয়পুর স্টেশন থেকে ১০ টাকা অটো ভাড়া নেয় মোহাম্মদিয়া হোটেলে যেতে। ১০০ টাকা কেজিতে বিরিয়ানি খেয়ে পেট শান্তি করলাম।আমাদের ৯ জনের মদ্ধে ১ জনের কাজ থাকার কারনে এই রাতেই তিনি কলকাতায় ব্যাক করেন আর আমরা সবাই আজমির এর ট্রেনের অপেক্ষা করি।জয়পুর থেকে আজমির সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১১ টায় ট্রেন যায় আজমির এর ভাড়া জেনারেলে জনপ্রতি-৮০ টাকা করে, সময় ৩ ঘন্টা লাগে। খাওয়া দাওয়া ও কেনাকাটা শেষে ট্রেনের জন্য ষ্টেশনে অপেক্ষা করি। ট্রেন আসলো আমরা দৌড়ে জেনারেল বগি(2nd Class) তে এ তড়িঘড়ি করে উঠি যেন সিট পাই, উঠে দেখি ফাকা ট্রেন সুন্দর ভাবেই ৩ ঘন্টার জার্নি শেষ করে আজমির ষ্টেশনে পৌছে যাই। 


Day-11 


রাত যেহেতু বেশি হয়েছে তাই আমরা বাহিরে না গিয়ে স্টেশনেই রাতটা পার করলাম। আমাদের সাথে তাবু ছিল কোন ষ্টেশনে তাবু খাটিয়ে ঘুমানো হয়নি তাবু গুলাকে মাটিতে বিছিয়ে নিজেদের জায়গা নির্দিষ্ট করে ব্যাগ গুলা সংগে রেখে সকাল ৭ টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে নেই। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে ক্লক রুমে সবার ব্যাগ রেখে পায়ে হেটেই বেড়িয়ে পরি খাজা মঈন উদ্দিন চিশতীর দরগাহ দেখতে। দরগাহ এরিয়াতে প্রতিদিন ই হাজার হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করে। গতবার যখন গিয়েছিলাম আজমিরে তখন এক হোটেলে খেয়েছিলাম তার খোজেই যাই তার হোটেলে খাওয়ার জন্য কিন্তু গিয়ে দেখি তার খাবার হোটেল বন্ধ তিনি এখন থাকার হোটেলের ব্যবসায় শুরু করেছেন মালিকের নাম আসলাম ভাই, তার হোটেলে ২ জনের রুমের ভাড়া ৩০০-৪০০ টাকা আপনি গেলে তার এখানেই থাকতে পারবেন।আমাদের থাকার প্লান ছিল না বলে তার হোটেলে থাকা হয়নি। ৪০ টাকা প্লেটে গরুর মাংশ দিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে দরগাহ তে প্রবেশ করি। দরগাহ তে প্রায় ২ টা পর্যন্ত ছিলাম খাজা র বংশের এক জনের সাথে প্রায় ১ ঘন্টা বসে এই দরগাহ এর ইতিহাস জানতে থাকি, আসকে সময় টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা। গতবার পুষ্কর ঘুরেছি আজমিরের তখন আনা সাগর লেক টা দূর থেকে দেখে এমন প্রেমেই পড়েছি জীবনে ১ বার হলেই এই লেক টায় সময় কাটানোর মন বাসোনা তৈরী হয়।২ টার পর পর বেড়িয়ে পরি দরগাহ থেকে হেটে হেটেই লেকে যাই। কেনই বা এই লেকের প্রেমে পরি তার প্রমান মিলেই লেকে যেতে যেতে। সামনে পাহাড়,লেকের পানিতে শত শত Seagull উড়ছে,পাহাড়ের নিচেই বাহারি সাইযের বাড়ি সবমিলিয়ে লেকের পরিবেশ টা ১০০ তে ১০০। লেকে ঢুকতে কোন টিকেট লাগে না। এই ট্রিপের বেষ্ট ইভিনিং কাটাই লেকে বসে। লেক থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে দরগাহ আসি জনপ্রতি ১০ টাকায় ঘোড়ার গারিতে চড়ি।রাত ৮ টার মদ্ধেই আমরা ষ্টেশনের ক্লক রুম থেকে ব্যাগ নিয়ে ষ্টেশন সংলগ্ন এজেন্সি থেকে আজমির-জয়সাল্মির এর স্লিপার বাসের টিকেট কাটি ভাড়া জন প্রতি ৫৫০ টাকা। রাতের ১১ টায় বাস ছাড়ে দরগাহ থেকে ১০কি.মি দুরের বাইপাস থেকে। ১১ টার বাসে উঠে পরি। সারারাত ঘরের পরিবেশে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেই। 


Day -12 


সকাল প্রায় ৮.৪০ এর দিকে বাস আমাদের #জয়সাল্মির নামিয়ে দেয়। বাস থেকে নামার আগেই ৩-৪ জন আলাদা আলাদা করে এসে গ্রুপের এডমিন মানে আমার সাথে প্যাকেজ নিয়ে আলাপ করতে চাচ্ছিলেন কাওরেই ফিরিয়ে দেই নি সবার প্যাকেজ শুনেছি আইডিয়া নিয়েছি।বাস থেকে নামার পর এমন একটা অবস্থা হয়েছে কে কার আগে আমাদের কাছে প্যাকেজ সেল করতে পারতে এই নিয়ে তাদের মদ্ধেই লাগালাগি, আমরা মধু আর তারা মৌমাছি এমন হয়েছিল সিচুয়েশন টা। বিরক্তিকর একটা অবস্থা কাকে রেকে কার কাছে যাই আর এক একজন অন্যজনের বিপক্ষে এমন এমন কথা বলছিল পুরাই কনফিউজড হয়ে গেছিলাম।  

জনপ্রতি ৩৫০ টাকায় একজনের সাথে ডিল পাক্কা করলাম। সে তার গাড়িতে করে হোটেলে নিয়ে যায় একটা রুম.. 

দিয়ে দেয় আমাদের ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ফ্রেশ হয়ে সবার ব্যাগ গুলা স্টোর রুমে রেখে রিসিপশনে যাই। সে তাদের ৩৫০ টাকার প্যাকেজে কি কি দেখাবে কি কি দিবে এই আমাদের দেখাতে লাগলো। এই প্যাকেজে ছিল- জরসাল্মির সিটি সাইট সিয়িং ও Sum Sum Desert e নিয়ে যাওয়া ও আসা সাথে Camel Safari এড ছিল। তিনি ছবিতে সব দেখাতে দেখাতে Bajrangi Vaijan মুভি যেখানে শ্যুট হয় Thar Desert এর প্যাকেজ দেখাতে লাগ্লেন। সবার কাছে Thar ই ভাল লেগে যায় কিন্তু খরচ তো ডাবল ৭০০ টাকা জনপ্রতি লাগবে সেখানে Camel Safari,Zip Safari,Sun Set ও আসা যাওয়া এড ছিল। জয়সাল্মির যদি কেউ যান এসব প্যাকেজে আগে থেকে মানে যখন প্যাকেজ কিনবেন সবকিছু পেপারে লিখে নিয়ে যাবেন এবং ক্লিয়ার করে যাবেন তাহলে কোন ঝামেলায় পড়তে হবে না। যাক সবকিছু ঠিকঠাক করে গাড়ি নিয়ে সিটি ট্যুরে বেড়িয়ে পরি প্রথমেই জয়সাল্মির ফোর্ট, প্যালেস ঘুরে ও লেক ঘুরে সোজা মরুভূমির দিকে চলে যাই। গত ৩-৪ দিনে অনেক ফোর্ড দেখা হয়েছে তাই জরসাল্মির এ ফোর্ড গুলাতে তেমন সময় দেয় নি আমরা। গাড়ি মরুভূমিরর পথেই চলছে ঘন্টা খানেক পর থামিয়ে দেয় Zip Safarir জন্য জিপে করে Thar এর দিকে রউনা হই জয়সাল্মির এ এই জিপ সাফারি টা ছিল অসাধারণ মজার। জিপ সাফারি শেষ করে ক্যামেল সাফারি করি একটা কথা বলে রাখি ক্যামেল সাফারি তত টুকুই করবেন যত টুকু আপনার প্যক্যাজে ইনক্লুডেড আছে। আমাদের সাথে উঠ ওয়ালা বাটপারি করে প্যাকজের মদ্ধে যতটুকু ঘুরার কথা ছিল তার অর্ধেক ঘুড়িয়ে নতুন লোভ দেখায় যে 


আরো ১ ঘন্টা ঘুরাবে 

আমাদের টাকা উসল করবে 

সান সেট দেখাবে  

মাত্র ৫ মিনিট ঘুড়িয়ে বলে শেষ আপনাদের ক্যামেল সাফারি।

তাদের কথার ফাদে পরে জনপ্রতি ১০০ টাকা মারা খাই।না হয় প্যাকজের মদ্ধে যা ছিল তাই তারা ঘুরিয়েছে বাড়তি ঘুরার দরকার ছিল না। মরুভূমিতে সান সেট দেখে জয়সাল্মির সিটিতে ফিরে আসি সন্ধায়।হোটেল থেকে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে যাই যোধপুর যাওয়ার জন্য। জয়সাল্মির ষ্টেশন এ গিয়ে ব্যাগ রেখে টেনের অপেক্ষা করি। রাতের খাওয়া দাওয়া একটা ঢাবাতে সেরে নেই, ধাবা তা এমন ছিল যেমন আমরা মুভিতে দেখি।জয়সাল্মির থেকে যোধপুরের ট্রেন রাতেই ১২.৩০ এ জনপ্রতি জেনারেলের ভাড়া ১০০ টাকা সময় লাগে ৪ ঘন্টা। 


Day-13 


৪ ঘন্টা জেনারেল বগিতে স্লিপার এর ফিল নিয়ে ভোর সকালে নামি ব্লু সিটি খ্যাত জোধপুর। আবারো আগের মত ক্লক হাওজে ব্যাগ রেখে জোধপুর- কলকাতা টিকেটের জন্য রিজার্ভেশন কাউন্টারে যাই। সেখানে গিয়ে নিরাসার বানী শুনতে হয়েছে কেননা জোধপুর হাওড়া এক্সপ্রেস এ ফরেইন কোঠাই নাই! 


আজকের টিকেটের জন্য ততকাল এ ও সময় মত চেষ্টা করেছি কিন্তু টিকেট মিলেনি আর আগে থেকে টিকেট কাটাটাও টাফ ছিল কেননা আমাদের হাতে টাকা বেচে গেলে জয়পুরের পর আজমীর,জয়সাল্মির,জোধপুর ঘুরবো এই বাড়তি প্লান টা মাথায় ছিল, সবমিলিয়ে বিতিক অবস্থা।

যাই হোক সব পেরা বাদ দিয়ে জোধপুর ঘুরতে বেড়িয়ে পড়ি। ষ্টেশন থেকে ১০ টাকা অটোতে করে ক্লক টাওয়ার। ক্লক টাওয়ার এর নিচের মার্কেট টা হেরিটেজ মার্কেট অনেক নতুন পুরাতন কাপড়,চুড়ি, জুতা,সান গ্লাস,তৈজসপত্র নানান জিনিসের সমাহার। ক্লক টাওয়ার থেকে হাটতে হাটতে কেল্লার দিকে যাই। কেল্লার উপর থেকেই ব্লু সিটি দেখা যায় খুব সুন্দর ভাবে ইন্টি টিকেট ১০০ টাকা। কেল্লা থেকে বেড়িয়ে খাবার এর খোজ করতে করতে হয়রান হয়েছি এই ট্রিপে শুধু জোধপুরে। চলতে চলতে ত্রিপোলিয়া মার্কেট এ কেনাকাটায় শেষ দিন টা পাড় করেছি। 


জোধপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্য এই ট্রিপের লাস্ট বড়জার্নি প্রায় ১৮০০ কি. মি, পথ কনফার্ম টিকেট না পেয়ে সীট ছাড়াই যাত্রা শুরু করি। 


Day-14 


কোন রকম ঘুরেফিরে ট্রেনের সময় গুলে কেটে গেছে। 


Day-15 


সকাল ৬.২৫ এ ট্রেন হাওড়ায় আমাদের পৌছে দিয়েছে। ৯ জনের ১ জন জয়পুর থেকে বিদায় নিয়েছে আর ৪ জন ০৬ তারিখ ঢাকায় আর আমরা বাকি ৪ জন কেনাটার জন্য কলকাতায় আরো ২ রাত থেকে যাই। 


কলকাতার থেকে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ২০ রুপিতে ২ ঘন্টায় বনগাও তারপর অটোতে করে ৩০ রুপিতে ২৫ মিনিটে বেনাপোল। বেনাপোল থেকে ৫৫০ টাকায় ঢাকা। 


Day-16 

আলহামদুলিল্লাহ ঢাকা 


ডিসেম্বর ২৪ তারিখ সকাল থেকে - জানুয়ারির ০৬ তারিখ সকাল পর্যন্ত ট্যুরের হিসাব সব রুপিতে হয়েছে, আমি টাকায় উল্লেখ্য করেছি সকল রুপির খরচ এক কথায় রুপির পরিবর্তে টাকা লিখেছি শুধু, অংক কনভার্ট করিনি নাম কনভার্ট করেছি।

খাবার এর হিসাব উপড়ে তেমন লিখিনি

প্রতিদিন আমাদের খাবার খরচ হয়েছে প্রতিদিন ১৫০-১৭০ টাকা মেইন মিলে। সকালে ও রাতে হেবি মিল আর দুপুরে অনেক দিন গেপ গেছে। খাবারে এতো কম ক্যান গেল একটা উদাহরন দিলেই বুঝবেন গরু প্রতি প্লেটে ৩০-৪০ টাকা।

আমি আমার ভ্রমনের হিসাব, র‍্যুট প্লান লেখার মাধ্যমে শেয়ার করলাম শুধু।আপনার ভ্রমনে আপনি কিভাবে ঘুরবেন, খাবেন,থাকবেন এটা একমাত্র আপনার নিজের উপর। 


ভ্রমন আমার নেশা,আপনার বিলাশীতার জায়গা ও হতে পারে তাই বলেছি পূরোটাই নিজের উপর। এখানে যা কিছুর হিসাব দেওয়া হয়েছে সব মূল খরচের হিসাব লিখে দেওয়া হয়েছে।পার্সোনাল টাকা আপনি এড করে নিবেন। সবসময় বাড়তি টাকা নিয়ে বের হওয়াই উত্তম।


শেখ সাইদুর ইসলাম

ঢাকা।

Comments

Popular posts from this blog

গোস্ট অফ কেটু!! পৃথিবীর সবথেকে রহস্যময় ভুতূরে পর্বতশৃঙ্গ 😮😲

কক্সবাজার সেন্টমার্টিন বাজেট ট্যুর।

কে এই ড.জাফর উল্লাহ? আসুন কিছু তথ্য ড. জাফরুল্লাহ সম্পর্কে একটু জেনে নিই।