সাকা-হাফং ঘুরতে গিয়ে আরাকান আর্মিদের হাতে বন্দী ১২ ঘন্টা!!

 বান্দরবান সম্পর্কিত খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য


একটা স্বাধীন দেশের ভূখণ্ডে কিভাবে অন্য দেশের একটা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এতোটা প্রভাব বিস্তার করে। আমরা আমাদের বিজিবি আর সেনাবাহিনী নিয়ে গর্ববোধ করি। আমাদের গর্বের জায়গাটা কি সত্যিই দুর্বল। নিজের স্বাধীন দেশে এতোটা বাজে পরাধীন অভিজ্ঞতা হবে বুঝতে পারিনি। আমরা কি সত্যিই আরাকান আর্মির কাছে বন্দী। পাহারী আদিবাসীরা স্বাধীন ভাবে বসবাস করতে পারছেনা। আরাকান আর্মিরা এতোটাই প্রভাব বিস্তার করতেছে যে পাহারী আদিবাসীরা তাদের উৎপাদিত সকল জিনিস থেকে তাদেরকে বড় একটা অংশ দিতে হয়। আর না দিলে চলে অত্যাচার। আরাকান আর্মিরা এতোটাই প্রভাব বিস্তার করে যে তারা এমনো বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি তাদের দয়ায় সেখানে থাকতে পারে। তাদের অহংকারী কথা আরো বুঝতে পারতাম যদি তারা বাংলা বা ইংরেজি বলতে পারতো। নিজের স্বাধীন দেশে আমরা নিজেরা স্বাধীন ভাবে চলতে পারছিনা। আমাদের সব কিছু তারা জোর করে রেখে দেয়। সব কিছু নিয়ে গেছে সেটাতে আফসোস নেই আল্লাহ এ যাত্রায় বাচিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোর আবেদন প্লিজ এ দেশটাকে বাঁচান। বান্দারবানে আমরা ফাইব স্টার হোটেল চাইনা, আমরা পুরো বান্দানবানকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে স্বাধীন দেখতে চাই। পাহারী আদিবাসী মানুষ গুলোকে অত্যাচার থেকে রক্ষা করুন একটি ব্যর্থ অভিযানের কষ্টের অভিজ্ঞতাঃ টানা দুই দিন বিশাল বিশাল পাহাড় আর দূর্গম পথে দিনে ৭/৮ ঘন্টা ট্রেকিং করে আমরা পৌঁছাই হাজরাই পাড়ায়।। রাত ৮ টার দিকে যখন পাড়ায় ঢুকি কয়েকজন যুবক এগিয়ে এসে আমাদের পরিচয়, লক্ষ ও উদ্দেশ্য জানতে চায় আমরা সাকাহাফং এর কথা গোপন রেখে বলেছিলাম নেফিউ পাড়ায় যাবো আজ রাতে আপনাদের পাড়ায় থেকে সকালে চলে যাবো কিন্তু তারা আমাদের আরকান আর্মিদের অযুহাত দেখিয়ে চলে যেতে বলে। সারাদিন না খেয়ে ট্রেকিং করে আমরা প্রচন্ড ক্লান্ত এই বিধ্বস্ত অবস্থায় গহীন পাহাড়ে অন্ধকারের মধ্যে কোথায় যাবো তাই তাদের কথা উপেক্ষা করে পাড়াই ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমাদের মন তখন উৎফুল্ল আগামীকাল আমরা জয় করবো বেসরকারী ভাবে ঘোষিত দেশের সর্বোচ্চ চূড়া।। রাত তখন ১১ টা। খাওয়া দাওয়া শেষে বেশিরভাগ ঘুমিয়ে পরেছে। আমরা ৩/৪ জন সজাগ। কেউ ঝিরির পাশে বসে জোৎস্না উপভোগ করছিলাম কেউ ক্যাম্পফায়ারে আগুনেই উষ্ণতা নিচ্ছিলো হটাৎ ঝিরির ওপাশ থেকে উদয় হলো আরকান আর্মি।। প্রথমে পাড়ার লোকজনদের ডাকলো তারপর আমাদের। শুরু হলো জবাবদিহি, কেনো আমরা এখানে এসেছি কিভাবে এসেছি কোথায় যাবো ইত্যাদি ইত্যাদি। দোভাষী হিসাবে পাড়ার এক লোক সহায়তা করলো। ঘন্টা দুই ধরে চললো নানাধরণের হুমকি ধামকি, ভয়ভীতি একপর্যায়ে তারা আমাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে।। কোনভাবেই কোন কিছু করতে পারলাম না। তখন আমরা প্রচন্ড অসহায় আর অনিরাপদ, শেষ প্রর্যন্ত নিজেদের স্বাধীন দেশে ভ্রমণের অপরাধে মোটা অংকের টাকা দিতে বাধ্য হই। শর্ত হচ্ছে সামনের দিকে আর এক পা ও যেতে পারবো না এবং ভোর রাতে চলে যেতে হবে।। সারারাত আরকান আর্মি সেখানেই অবস্থান করলো। বিষাদময় রাতে কোনরকম একটু ঘুমিয়ে অন্ধকার থাকতেই উঠে তাবু গুটিয়ে ফেলি। আরকান আর্মি নিজেরা আমাদের সঙ্গে নয়াচরন পাড়া হয়ে বুলিং পাড়া পর্যন্ত আসে। আমরা সেখান দিয়ে নাইক্ষাং মুখের দিকে চলে যাই নিরাপদে। একটা স্বাধীন দেশের নিরাপত্তা আর নিরাপত্তা বাহিনীর বেহাল অবস্থার কিছু বাস্তব চিত্র আর কিছু ভয়ংকর অভিজ্ঞতাই ছিলো এবার আমাদের ট্যুরের মূল প্রাপ্তি।


©Rahman Zahid

Comments

Popular posts from this blog

গোস্ট অফ কেটু!! পৃথিবীর সবথেকে রহস্যময় ভুতূরে পর্বতশৃঙ্গ 😮😲

কক্সবাজার সেন্টমার্টিন বাজেট ট্যুর।

কে এই ড.জাফর উল্লাহ? আসুন কিছু তথ্য ড. জাফরুল্লাহ সম্পর্কে একটু জেনে নিই।