আমার একজন প্রেমিকা ছিলো!!!🙃🙃

আমার একজন প্রেমিকা
ছিলো। তার
একটা পাগলামি ছিলো, গভীর রাতে
ফোন দিয়ে
বলবে "তোমাকে আমার দেখতে ইচ্ছা
করছে, তুমি
কি একটু আসবে বাসার সামনে।" আমিও
তার
পাগলামি কে প্রশ্রয় দিয়ে চলে
যেতাম। ওদের
বাসার প্রথম গেটের দেয়াল টপকালেই
কেঁচি
গেট,আর নিজেদের বাড়ী বলেই কেঁচি
গেটের
সেকেন্ড চাবিটাটা খুব সহজেই
নিজের করে নিতে
পেড়েছে।
যখন দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ
করতাম প্রায়ই
দেখতাম কেঁচি গেট খুলে সে
বাহিরে, আমি যাওয়া
মাত্রই জড়িয়ে ধরে কান্না, চোখের
জলে আমার
শার্টের বুকের অংশটা ভিজে যেতো
প্রায়
প্রতিবারই। আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে একটা
কথাই বলতো
"তুমি জানো আমি বেশী দিন বাচবো
না, তবুও
আমাকে এতো ভালোবাসো কেন?
দেখবে এই
ভালোবাসা একদিন তোমাকে
কাঁদাবে " আর তার
এই রাতের বেলা দেখতে চাওয়ার
পাগলামি টা
বেড়ে যেতো যখন আকাশে চাঁদ এর
আলোটা বেশী,
তখন প্রায় প্রতি রাতেই এই ধরনের
পাগলামি সহ্য
করতাম।
আর আমারো ভালো লাগতো,কারন
আমি তাকে
এলোমেলো চুলে দেখতে বেশী
ভালবাসতাম।
এলোমেলো একমুঠ চুল কোন মতে পিছনে
বেধে
রেখেছে আর তার মাঝে কয়েকটা
আবার মুষ্টি বন্ধী
থেকে মুক্তি পেয়ে গালের পাশে
ঝুলে রয়েছে।
চাঁদের আলোয় অদ্ভুত সুন্দর লাগতো।
যেদিন বাসায় কেউ সজাগ ওইদিন
বেচারি নিচে
আসতে পারে না, দু তলার বারান্দায়
দাঁড়িয়ে
থেকেই চোখ মুছতো।আমিও হেটে চলে
যেতাম
সামনে দিয়ে।
যেদিন ওর সাথে আমার শেষ দেখা ও
আমাকে বলে
গিয়েছিলো আমি যদি আর না ফিরি
রাগ করো না,
আমার কেন জেনো মনে হচ্ছে আমি আর
ফিরবো
না। তুমি কি পারবে ভালো থাকতে
আমাকে
ছাড়া? না পারলে শিখে নিও। এর দুই
দিন পরই ওকে
হাসপাতালে রক্ত বদলানোর জন্য
নিয়ে গেলে
ডাক্তার রা আর ছাড়ে না, ভর্তি
করিয়ে দেয়।
হাসপাতালে একদিন দেখতে
গিয়েছিলাম(ওর কোন
এক বান্ধবীর কল্যাণে) সাহস করে
কিন্তু
দেখা হয়
নি, মানে আমি দেখেছি ও দেখে নি,
ঘুমিয়ে
ছিলো। চোখের নিচে কালি পড়ে
গেছে,চেহারার
চামড়াগুলো কেমন কুঁচকে গেছে, এক
নজরে তাকিয়ে
থাকা যায় না, মায়া লাগে,বড্ড
মায়া বেড়ে
গেছে।
ও যেদিন মারা যায় সে দিন ছিলো
সোমবার , বাদ এ জানাজা দিয়ে যখন
বাসায়
ফিরছি,একটু পর পর খুব তিঞ্চা লাগছে
কেমন যেন বুক
শুকিয়ে আসছে,রিক্সা নিয়েছিলাম
বাসায় আসার
জন্য, কিছুদূর এসেই ছেড়ে দেই রিক্সা।
নেমে
কিছুক্ষন হাটার পর দেখি পা ফেলতে
পারছি না
কেমন জেনো শরীর কেপে কেপে
উঠছে, কি জেনো
অজানা একটা ব্যথা অনুভব করছি।
খুব কষ্ট হাটতে,তারপরও হাটছি। আর
ভাবছি প্রিয়
মুখটা শেষ বারের মতো দেখতে
পারলাম না। কি
উছিলায় দেখবো,আমি তো ওর কোন
আপন কেউ না,
ওর পরিবারের কেউ তো চিনে না
আমাকে। কিন্তু
কেউ কি কোনদিন জানবে আমরা কতো
আপন
ছিলাম? জানবে না আর কেউ
কোনদিন।
হাটছি আর কাঁদছি,কিন্তু মুখে কেমন
একটা হাসি
লেগে আছে, রাস্তার মানুষ গুলো হা
করে তাকিয়ে
আছে ছেলেটা হাসে আবার একটু পর পর
চোখ মুছে,
পাগল নাকি? ওইদিন রাস্তাটা খুব
অচেনা মনে
হচ্ছিল, চেনা রাস্তাটা ভুলে যাচ্ছি
বার বার।
সন্ধ্যার পর ছাদে উঠে দেখি আকাশ
জুড়ে একটা
বিশাল চাঁদ। ছাদে পুরো শরীরটা
ফেলে দিয়ে ডান
হাত টা মাথার নিচে বাকা করে
দিয়ে বালিশ
বানিয়ে তাকিয়ে ছিলাম চাঁদের
দিকে। হটাৎ করে
মনে হলো আর তো কেউ কোন দিন
আমাকে ফোন
দিয়ে বলবে না, একটু আসবে আমার
বাসার সামনে?
আমার না তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা
করছে।
কেউ তো আর কোনদিন আমাকে বুকে
মাথা রেখে
কাঁদতে কাঁদতে শার্ট ভিজিয়ে দিবে
না। আমি যদি
ওই বাসায় প্রথম গেটের দেয়াল টপকে
যাই কেউ কি
দাঁড়িয়ে থাকবে কেঁচি গেট খুলে। না
কেউ থাকবে
না। আচ্ছা ওই বাসায় দু তলার
বারান্দায় দাঁড়িয়ে
থেকে কি কেউ চোখ মুছবে নিচে
হেটে চলা এই
ছেলেটার জন্য।
আজ সোমবার , অবাক করার বিষয়
আজো
আকাশে বড়
একটা চাঁদ। আজ চার বছর এই ছেলেটার
ফোনে অনেক
ফোন আসে কিন্তু কেউ বলে না তুমি
একটু আসবে?
তোমাকে দেখবো।
ছাদে শুয়ে চাঁদ দেখছি।
খুব ইচ্ছা হয় কার্নিশে দাঁড়িয়ে হাত
দুটি ছড়িয়ে
দিয়ে নিজের এই দেহ টাকে হেলিয়ে
দেই ছয়তলার
এই ছাদ থেকে। বাতাসে বাধা পেতে
পেতে কোন
এক সময় দেহটা মাটি ছুবে আর নিশ্বাস
টা চলে
যাবে। কি হয় এমন করলে?
তুমি জানো আজো তোমার জন্য বড্ড
মায়া লাগে,
জ্যোৎস্না রাতে ফোনের দিকে
তাকিয়ে থাকি এই
বুঝি ফোন আসলো,এই বুঝি তুমি বলবে
আসতে। আসে
না ফোন,বলো না তুমি।
আচ্ছা তুমি তো আর ফিরবে না,
তাহলে এতো
ভালবাসি কেন তোমাকে,কেন ভুলতে
পারি না।
পরেরজন্মে যেদিন দেখা হবে
প্রত্যেকটা প্রশ্নের
উত্তর কিন্তু তোমাকে দিতে হবে।
মনে রেখো।।...

Comments

Popular posts from this blog

গোস্ট অফ কেটু!! পৃথিবীর সবথেকে রহস্যময় ভুতূরে পর্বতশৃঙ্গ 😮😲

কক্সবাজার সেন্টমার্টিন বাজেট ট্যুর।

কে এই ড.জাফর উল্লাহ? আসুন কিছু তথ্য ড. জাফরুল্লাহ সম্পর্কে একটু জেনে নিই।